আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তাদের আইনের আওতায় না আনলে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার দেন তিনি।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে ছাত্র-জনতার দাবির প্রেক্ষিতে পুলিশকে এমন নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।এর আগে, দুপুর আড়াইটার দিকে বিকেএমইএʼর পক্ষ থেকে জেলা পুলিশ ও শিল্প পুলিশকে তিনটি করে মোট ছয়টি গাড়ি উপহার দেয়া হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এসময় তার ফেরার পথে তার পথ আটকায় ছাত্র নেতারা। তারা জুলাই অভ্যুত্থানের সময় লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ওসমান পরিবারের সদস্য এবং তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার, সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো, ওসমান হাদির উপর হামলার মূল আসামিকে গ্রেফতার, থানা ও আদালতকে রাজনৈতিক বলয়মুক্ত রাখাসহ সাত দফা দাবি জানান।
এ সময় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জাতীয় ছাত্রশক্তি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন- এনজিবি এবং ওয়ারিয়র্স অব জুলাই নামে সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাদের দাবিগুলো ‘যৌক্তিক’ উল্লেখ করে বলেন, এসব দাবি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এ সময় ছাত্রনেতারা পুলিশ ‘মামলা নেই’ বলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করছে না বলে দাবি করেন। এ দাবির প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সীকে সামনে ডেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্দেশ দেন, 'আওয়ামী লীগের যারা সন্ত্রাসী, তার বিরুদ্ধে মামলা আছে কি না, সেইটা দেখার কোনো ব্যাপার নেই। তাদের সাথে সাথে আইনের আওতায় নিয়ে আসবা। আর আইনের আওতায় না আসতে পারলে তোমাদের বিরুদ্ধেও কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় দোয়া চেয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হলেও তার ব্যবহৃত ‘হাতিয়ার’ উদ্ধার করা হয়েছে। বলেন, 'ওর সাথে যে আরেকজন ছিল তাকে গ্রেফতার করেছি, রিমান্ডেও নিয়েছি। বাকি কাজও আস্তে আস্তে আমরা করতে পারবো।'
উপদেষ্টা বলেন, 'নারায়ণগঞ্জে যিনি নির্বাচন করবেন না, সেটা তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। কে নির্বাচন করবে, কে নির্বাচন করবে না, এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটাতে আমাদের বলার মতো কিছু নেই।'
নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'নিরাপত্তা তো একটা বড় ধরনের শব্দ। আপনারাও তো সবাই আজকে এখানে আসছেন। আপনারাও তো বলতে পারতেন, আমাদের নিরাপত্তা সংকট আছে, আমরা কেউ আসবো না। এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। উনি নির্বাচন কেন করবে না।'
সম্প্রতি লুট হওয়া এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ‘আলু-পেয়াজ নিয়ে বক্তব্যের’ বিষয়েও প্রশ্ন রাখেন ছাত্র নেতারা। উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, 'ওইটা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠান ছিল বলে ওই মন্ত্রণালয়ের সমস্যাগুলো এবং কৃষকদের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম। অন্যান্য যেসব সমস্যা তা নিয়ে প্রতি সপ্তাহে আমরা সাংবাদিকদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বসি।'
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, শিল্প পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি গাজী জসিম উদ্দিন, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক ও শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামানসহ আরও অনেকে।
'আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের' গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, 'আমাদের অভিযান অলরেডি চলছে, চেকপোস্ট রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :