ঢাকা শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

কুয়াকাটায় রাস উৎসব গঙ্গাস্নানে মত্ত হাজারো পুণ্যার্থী

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:০৫ রাত

পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও কুয়াকাটায় আজ রাতে অধিবাসের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব শুরু হয়েছে। বিকেল থেকেই রাসভক্তদের কুয়াকাটার রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম প্রাঙ্গণে আনাগোনা শুরু হয়। রাতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় এলাকা। কুয়াকাটা সৈকতের আশপাশ পর্যন্ত রাসভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। রাত যতই বাড়ছে, ততই বাড়ছে রাসভক্ত ও পুণ্যার্থীর ভিড়। এক কথায়, যেন কুয়াকাটায় রাসভক্তদের ঢল নেমেছে।

আগত নারী-পুরুষ সবাই রাতভর সেবাশ্রম প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মিলিত হচ্ছেন। পারিবারিকভাবে আগত ভক্তের সংখ্যাও এবার অনেক বেশি। ভোর থেকে শুরু হবে রাসভক্তদের সাগরে পুণ্যস্নান। হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমার উৎসব, পূজা ও পুণ্যস্নানকে ঘিরে কুয়াকাটায় বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ।

বুধবার প্রত্যুষে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে কুয়াকাটার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। বিকেল থেকে কলাপাড়া পৌরশহরের মদনমোহন সেবাশ্রমে রাসমেলা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ভক্তরা। ইতোমধ্যে সেখানে স্থাপন করা হয়েছে রাধাকৃষ্ণের যুগল প্রতিমা। বসেছে পাঁচ দিনের রাসমেলা। তিথি অনুযায়ী ভরা পূর্ণিমার জোয়ারে বুধবার ভোর থেকে পুণ্যস্নানে অংশ নেবেন আগত ভক্তরা। পাপ মোচন ও পুণ্যলাভের আশায় এবছরও হাজারো রাসভক্তের সমাগম ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

কুয়াকাটা রাসপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী নিহার রঞ্জন মণ্ডল জানান, “এ বছরও পূর্ণিমা তিথিতে হাজারো তীর্থযাত্রীর পদভারে মুখরিত হয়ে আছে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। ভক্তবৃন্দ সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন। রাতভর নামকীর্তন, ভাগবত পাঠ ও আরতি শ্রবণ চলবে। শ্রীকৃষ্ণের লীলা কীর্তন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হয়েছে।”
বুধবার সূর্যোদয় থেকে দিনভর ভক্তরা সাগরে করবেন পুণ্যস্নান। পাপ মোচনের আশায় সাগরে নামবে ভক্তদের ঢল। একই দিনে সৈকতে অনেকেই নিজ নিজ মানত পূরণের জন্য পুরোহিত এনে দেবতার উদ্দেশে পূজা দেবেন।

হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, “হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানে কুয়াকাটা এখন উৎসবমুখর। দুদিনব্যাপী রাসমেলা উপলক্ষে পর্যটকরা হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে অবস্থান করলে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছেন। অধিকাংশ হোটেল-মোটেল আগাম বুকিং হয়ে গেছে।”

কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে আগত পর্যটক ও পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সর্বক্ষণ টুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার হামিদ বলেন, “রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক থানা পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, টুরিস্ট পুলিশ ও গ্রাম পুলিশসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।

 
 

Link copied!