এই ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনাকে তাদের মাঠে হারানোর হুঙ্কার দিয়েছিলেন রাফিনিয়া। তার এই হুঙ্কার যে ফাঁপা ছিলো কথায় নয়, কাজে প্রমাণ করেছেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। দাপুটে ফুটবলে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে কোণঠাসা করে বড় জয়ের দিনে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চল থেকে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপও নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা।
বুধবার বুয়েন্স আইরেসে বাংলাদেশ সময় সকালে শুরু হওয়া ম্যাচ লিওনেল স্কালোনির দল জিতেছে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে। এই জয়ে বাছাইপর্বে ১৪ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট হলো আর্জেন্টিনার। এই ম্যাচে নামার আগেই অবশ্য বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের। এর আগে শুরু হওয়া উরুগুয়ে-বলিভিয়া ম্যাচ ড্র হলে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডার টিকেট পেয়ে যায় বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এদিকে বড় হারে সমান ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে এখনো শঙ্কার দোলাচলে থাকল পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিনরা।
এদিন প্রথমার্ধেই খেলার ফল অনেকটা নিশ্চিত করে নেয় স্বাগতিক দল। বিরতিতে যাওয়ার আগেই স্কোরলাইন হয়ে যায় ৩-১। ব্রাজিলের দুর্বল রক্ষণে বারবার কাঁপন ধরিয়ে বিরতির পর তারা আদায় করেন আরেক গোল।
খেলার একদম ৪ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা, ১২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। ২৬ মিনিটে ম্যাথেয়াস কুনা একটি গোল শোধ দিলে খেলায় ফেরার আভাস দিয়েছিলো ব্রাজিল। তবে ৩৭ মিনিটে লিভারপুলের অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার আলেক্সিস ম্যাক আলিস্টার আরেক গোল দিলে স্কালোনির দলের দাপট থাকে অব্যাহত।
বিরতির পর নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় ছিলো ব্রাজিল, কিছু আক্রমণও তৈরি করছিলো তারা। তবে যখনই বল যায় আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ডদের পায়ে ব্রাজিলের রক্ষণভাগকে দেখা যায় দিকহারা। ৭১ মিনিটে তেমন এক পরিস্থিতিতে বল পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে বল জালে জড়ান অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ তারকা জুলিয়ান সিমিওনে।
প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক আলিসন বেকারের চোটে এদিন বেন্তোকে নামাতে হয় ব্রাজিলকে। এই গোলরক্ষক ছিলেন ভীষণ নড়বড়ে। ৪ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে বক্সের মাঝখানে বল পান আলভারেজ। বিপদজনক এই ফরোয়ার্ডকে ঠেকাতে পারেনি ব্রাজিলের রক্ষণ। বেন্তো ঠিক সামনে থাকলেও তিনি সহজেই কাবু হয়ে যান।
১২ মিনিটে নাহুয়েল মলিনার ক্রস ব্রাজিলের একজন খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে সামান্য দিক বদলে যায় এনজোর সামনে, তিনি টোকা মেরে ব্যবধান করেন দ্বিগুণ। শুরুতেই দুই গোলে পিছিয়ে হতভম্ব হয়ে পড়া ব্রাজিল ২৬ মিনিটে পায় গোল। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান কুনা। তবে এই পর্যন্তই, পরে আর তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৩৭ মিনিটে তৃতীয় গোলের দায়ও কিছুটা পড়ে বেন্তোর উপর। বক্সে উড়ে আসা শট সামনে এগিয়ে তিনি লুফতে দেরি করেন, তার হাতের উপর থেকে বল নিয়ে জালে জড়ান ম্যাক আলিস্টার।
এরপর খেলায় ফেরার আর কোন অবস্থাই তৈরি করতে পারেনি ব্রাজিল। অগোছালো, ছন্নছাড়া, হতশ্রী দলটিকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করে আর্জেন্টিনা। হারের চেয়ে হারের এই ধরণে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে দরিভাল জুনিয়রের জায়গা আবার প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল।
আপনার মতামত লিখুন :