আরিফ বিল্লাহ: বাংলাদেশ আজ এক ভয়াবহ রাজনৈতিক অসুস্থতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। দেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলি নিজেদের ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা ও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে এমনভাবে লিপ্ত হয়েছে যে, সেখানে সাধারণ মানুষের কল্যাণ, জাতীয় ঐক্য কিংবা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চিন্তা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
বিক্ষোভ, সহিংসতা, অগ্নিসন্ত্রাস, সরকারি-বেসরকারি সম্পদের ক্ষতি এসব এখন যেন রাজনীতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ রাজনীতি মানে হওয়া উচিত ছিল আদর্শের লড়াই, চিন্তার প্রতিযোগিতা এবং জনগণের উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। কিন্তু আজ রাজনীতি যেন পরিণত হয়েছে প্রতিহিংসার এক ময়দানে, যেখানে নীতি ও নৈতিকতার কোনো স্থান নেই।
এই অসুস্থ রাজনীতির সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হলো সাধারণ মানুষ। তারা প্রতিদিন দেখছে, কীভাবে দেশজুড়ে ধ্বংসের আগুন জ্বলছে; কীভাবে রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে রাজপথ; কীভাবে জনগণের করের টাকায় গড়া রাষ্ট্রীয় সম্পদ পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি দেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলি অন্যায়ের জবাবে অন্যায়, সহিংসতার জবাবে সহিংসতা দিয়ে সমাজে ভয় ও বিশৃঙ্খলার জন্ম দিচ্ছে।
এজন্য বলি, আমাদের রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে নৈতিকতার মূলনীতিতে। কারণ রাজনীতি যদি ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে না চলে, তবে তা ধ্বংসের পথেই যাবে। তাই দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের সার্বিক স্বার্থে সবাইকে সহনশীল হতে হবে। মতভেদ থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু মতভেদ যেন বৈরিতায় পরিণত না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
আমাদের করণীয়:
১. আমরা নাগরিক হিসেবে যেন কোনো দলীয় উস্কানিতে জড়িয়ে বিশৃঙ্খলায় অংশ না নিই।
২. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণা নয়, যুক্তি ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা প্রচার করি।
৩. তরুণ সমাজ যেন বুঝতে শেখে, রাজনীতি মানে গালি-সংঘর্ষ নয়; বরং সেবা, আদর্শ ও দায়িত্ব।
বাংলাদেশের রাজনীতি যদি সুস্থ পথে ফিরতে না পারে, তাহলে ক্ষতি হবে কেবল দলগুলোর নয়, গোটা জাতির।
তাই চলুন, এখনই শুরু করি — অসুস্থ রাজনীতি বন্ধ করি।
আপনার মতামত লিখুন :