নারায়ণগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় ভিপি রাজীব হত্যায় দু’জন গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল ২০২০

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় হামলা চালাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়ে সন্ত্রাসী মিরু বাহিনীর সদস্য সন্ত্রাসী রাজিব ওরফে ভিপি রাজিব নিহতের ঘটনায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এ মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে নিহত ভিপি রাজিবের বাবা আসু মিয়া তালুকদার বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার আসামীরা হলো পাগলা জেলেপাড়া এলাকার মোকলেছ মিয়ার ৫ ছেলে মিঠুন, রাব্বি, ইয়াসিন, কাওসার ও মিলন, তাদের সহযোগী আলআমিন ওরফে কেবলা আলামিন, সানজিদা, চাঁদ সেলিম, ফয়সাল, সলেমান ওরফে কুট্রি, আঃ জলিল, মানিক ওরফে কুত্তা মানিক সহ ১৫/২০ জন অজ্ঞাত। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ফতুল্লার পাগলা বৌ-বাজার এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে চাঁদ সেলিম (৩৫) একই এলাকার সাত্তার মুন্সির ছেলে সলেমান ওরফে কুট্রি (৩৭)। তারাও এলাকার সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত।

ফতুল্লা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহাদাত হোসেন জানান, সোমবার প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলার শিকার হয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভিপি রাজিব মারা যায়। রাতেই রাজিব হত্যায় জড়িত থাকায় আসামী গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হয়েছে। ভিপি রাজিব হত্যায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর মামলার এজাহারভুক্ত আসামী চাঁদ সেলিম ও সলেমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গত ২০১৬ সালে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রন ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে মিরু বাহিনীর সাথে মিঠুন বাহিনীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই সময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। পরে মিঠুনের পক্ষ হতে মিরু বাহিনীর রাজিব সহ অন্যদের আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। সোমবার ২০ এপ্রিল দুপুরে পাগলা জেলে পাড়া গিয়ে একটি মামলার বাদীপক্ষকের লোকদের মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে হামলা চালাতে গিয়ে নিজেরা হামলার শিকার হয় সন্ত্রাসী মিরু বাহিনীর সদস্য ভিপি রাজিব সহ তার লোকজন। মিঠুন বাহিনীর লোকজন মিরু বাহিনী ভিপি রাজিব সহ অন্যদের কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে ভিপি রাজিবকে হাসপাতালে নেয়া হলে সোমবার রাতে সে মারা যায়।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ভিপি রাজিব ইন্টারনেটের পাশাপাশি কবুতর পুষতেন। সোমবার দুপুরে কবুতরের খাবার কিনতে পাগলা বাজারে যাওয়ার পথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উল্লেখিত আসামীরা পৌনে ২ টায় জাউল্লাপাড়া এলাকায় মারধর করে রাজিবকে হত্যা করে।

এলাকাবাসী জানান, খুন হওয়া রাজিব ও খুনের মামলার আসামীরা এক সময় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মীর হোসেন মীরুর সমর্থক ছিলেন। সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে চাঁদ সেলিম দলবল নিয়ে আলাদা গ্রুপ তৈরি করে পাগলা বৌবাজার ও জেলেপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে থাকেন। এক পর্যায়ে শেল্টার দাতা হিসেবে এক শ্রমিকলীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশের আশ্রয় নেয় চাঁদ সেলিম। এরপর মীরুকে প্রতিহত করতে একেরপর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে বেড়ায় চাঁদ সেলিম। এতে একাধীক মামলা হয় চাঁদ সেলিম ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসী আরো জানান, রাজিবের বিরুদ্ধেও একাধীক মামলা আছে। সে এলাকায় দুর্ধষ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতেন। তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনীও রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :