ঝিনাইদহে পৌষের শুরু থেকেই চলছে কুমড়া বড়ি তৈরির উৎসব

প্রকাশিত : ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: শীত এলেই কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যাস্ত থাকেন ঝিনাইদহের গৃহিণীরা। বিভিন্ন জায়গায় এর নাম ভিন্ন হলেও এ এলাকায় কুমড়া বড়ি নামে সবাই চেনে। পৌষের শুরু থেকেই সব বাড়িতে চলে এর উৎসব। ঝিনাইদহে এ কুমড়া বড়ির প্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে। কুমড়া আর কলাই এক সঙ্গে পিষে তৈরি করা হয় এক প্রকারের গুড়া। যা কোনো পাত্রে ছোট করে সারিবদ্ধভাবে রেখে রোদে শুকানো হয়।

এরপর ঘরে সংরক্ষণ করে তরকারিতে দিয়ে সারা বছর খাওয়া হয়। গৃহিণীরা জানান, বর্ষা মৌসুমে গ্রামের প্রায় প্রত্যেক কৃষক পরিবারেই চালকুমড়া লাগানো হয়। এ কুমড়ার জালি তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। আর কিছু কুমড়া বড়ি দিতে রাখা হয়। সাজু বিবি নামে এক বৃদ্ধা বলেন, একসময় বড়ি দেয়াটা বেশ কঠিন কাজ ছিল। তখন প্রচন্ড শীতে রাত জেগে ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে গুড়া তৈরি করা হতো। কিন্তু এখন মেশিনে করা হয়।

কালীগঞ্জের ফয়লা গ্রামের ফাতেমা বেগম জানান, বড়ি বানাতে কলাই প্রথমে পানিতে ভেজানো হয়। পরে এর কালো ছাল তুলে কুমড়ার সঙ্গে মিশিয়ে মেশিনে বা ঢেঁকিতে পিষে গুড়া করা হয়। একপর্যায়ে আঠালো হলে জাল, টিন, চালুনি কিংবা পরিষ্কার কাপড়ে বড়ি আকারে দিয়ে রোদে শুকাতে হয়। উপজেলার খড়িকাডাঙ্গা গ্রামের মমতাজ বেগম জানান, এ বছর তিনি কেজি প্রতি ১০০ টাকা দরে কলাই ও ৩০০ টাকা দিয়ে তিনটি কুমড়া কিনে বড়ি দিয়েছেন।

অর্ধেক পরিবারের জন্য রেখে বাকিটা শহরে থাকা মেয়ে জামাইদের জন্য পাঠিয়েছেন। মাছ না থাকলেও তরকারি বা সবজিতে বড়ি দিলে অনেক স্বাদ হয়। শহরের মাছ বাজার সংলগ্ন দোকানি শুসান্ত ভট্টাচার্য্য জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় গত বছরের তুলনায় এবার কলাই বেশি বিক্রি হচ্ছে। কেজি প্রতি ১০০ টাকা দরে এক সপ্তাহে তিনি ২৭ মণ বিক্রি করেছেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :