রাজশাহীতে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় খুন হোন সালাম!

প্রকাশিত : ১২ মে ২০২০

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দক্ষিণ সাজুড়িয়া গ্রামের পুকুর পাহারাদার আবদুস সালামকে (৪৭) খুন করা হয়েছে। এ হত্যায় জড়িত এক নারী সোমবার দুপুরে নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গত শনিবার রাতে সাজুড়িয়া গ্রামের পুকুরপাড়ের ছোট্ট ঘরে খুন হন পাহারাদার আবদুস সালাম। রবিবার সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ হত্যায় জড়িত সন্দেহে সেদিনই গ্রামের শিরিন বেগম (৩৫) নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের জেরার মুখে তিনি এ হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে সোমবার আদালতে তোলা হয় তাকে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, শিরিন বেগম সোমবার রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল মাহমুদের আমলী আদালত-২ এ ফোজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে তিনি জানিয়েছেন, পরকীয়া প্রেমের পর বিয়ে না করায় সালামকে খুন করেছেন তিনি। শিরিন এ হত্যায় জড়িত অন্যদেরও নাম জানিয়েছেন। তার দেয়া তথ্যমতে সোমবার সন্ধ্যায় সাজুড়িয়া গ্রামের কেফা, সেলিম ও রুস্তম নামের আরও তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সালাম হত্যায় তার স্ত্রীর দায়ের করা হত্যা মামলায় এ তিনজনকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

ইফতেখায়ের আলম জানান, গলায় রশির ফাঁসের দাগ ও রক্তাক্ত অবস্থায় সালামের লাশ উদ্ধারের পরই রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী গুরুত্বসহ তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া শিরিন বেগমকে আটক করা হয়। মূলত অবৈধ সম্পর্কের জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ বলছে, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রায় দুই বছর আগে স্বামী পরিত্যক্তা শিরিন বেগমের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন সালাম। কিন্তু শিরিন বিয়ের কথা বললে সালাম কৌশলে এড়িয়ে যেতেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুকুরপাড়ের একটা ঘরে মিলিত হন সালাম ও শিরিন। পরে শিরিন বিয়ের কথা বললে সালাম রেগে যান। এ সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।

একপর্যায়ে শিরিন কাঠের বাটাম দিয়ে সালামের মাথায় জোরে আঘাত করেন। সালাম আহত অবস্থায় পড়ে থাকলে শিরিন তার পরিচিত কেফা, সেলিম ও রুস্তমকে ডাকেন। তারা আসার পর সালামের মাথায় আঘাত করেন এবং গলায় রশি পেঁচিয়ে ফাঁস দেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তারা পালিয়ে যান। জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, এ হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। হত্যার রহস্যও উদঘাটন হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হবে।

আপনার মতামত লিখুন :