বান্দরবানে স্বর্ণ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা চলে গেলেন না ফেরার দেশে

প্রকাশিত : ১৩ এপ্রিল ২০২০
স্বর্ণ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ও বুদ্ধ ধর্মীয় গুরু উচহ্লা ভান্তে

বান্দরবানের স্বর্ণ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ও বুদ্ধ ধর্মীয় গুরু উপঞ্ঞাজোত মহাথেরো (উচহ্লা ভান্তে) অবশেষে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। তার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অং সুই মারমা। সোমবার সকালে (১৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার লাইফ সাপোর্ট খুলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরু ভান্তের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে সোমবার সকালে লাইফ সাপোর্ট খুলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে গত (১০ এপ্রিল) সকালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হলে গুজব আকারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তার ভক্তদের মাঝে নানা গুঞ্জন শুরু হয়।

পরে বিষয়টি গুজব হিসেবে জাতীয় কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে ভান্তের ভক্তদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি আসলে ও সোমবার (১৩ এপ্রিল) সকালে সত্যি সত্যি তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পার্বত্য তিন জেলাসহ সারা বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ও গুরু ভান্তের ভক্তদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।এ ব্যাপারে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডাক্তার অং সুই মারমা জানিয়েছেন, বান্দরবানের স্বর্ণ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা গুরু ভান্তে সত্যি মারা গেছেন এটা গুজব নয়। আমি শুনেছি গুরু ভান্তে‌কে চট্টগ্রাম ম্যাক্স হাসপাতাল হতে রাউজানে নিয়ে যাওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বুদ্ধ ধর্মীয় গুরু উচহ্লা ভান্তে হওয়ার আগে ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম (অনার্স) পাশ করার পর ৮৩ সনের বিসিএস এর মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করে ১২ বছর তিনি প্রশাসনে কর্মরত ছিলেন। পরে প্রশাসনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ১৯৯৫ সালে গৃহীজীবন ত্যাগ করে সমাজ ও মানুষের কল্যাণে তৎকালীন মাঘী পূর্ণিমার দিনে তিনি ভিক্ষুত্ব গ্রহণ করেন।

এরপরে ধাপে ধাপে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন অনাথ ও গরীব ছেলেদের জন্য বি হ্যাপী লার্নিং সেন্টার, শহরের পশ্চিম বালাঘাটায় অবস্থিত বুদ্ধ ধাতু জাদি (স্বর্ণ মন্দির), কালাঘাটায় অবস্থিত রাম জাদি’সহ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য ভারতের বুদ্ধগয়া, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে অনেক বুদ্ধ মন্দির স্থাপন করেন তিনি।

 

আপনার মতামত লিখুন :