নওগাঁ জেলায় করোনা প্রতিরোধে দুই কর্মকর্তার যুদ্ধ

প্রকাশিত : ৫ এপ্রিল ২০২০

রওশন আরা পারভীন শিলা, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাস আতঙ্কে কুপোকাত সারা বিশ্ব। চীনরে উহান থেকে ২০৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এই ভয়ানক ভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ। যার মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধ লাখ। এদিকে বাংলাদেশেও ছোবল মেরেছে প্রাণঘাতী এই কোভিড-১৯। এরই মধ্যে কোভিডে আক্রান্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে আইসিডিআর। দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম সনাক্ত হওয়া এই ভাইরাসে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ জন। যার মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৩০ জন।

এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশের ন্যায় নওগাঁ জেলাতে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় হার্ডলাইনে প্রশাসন। বিশেষ করে সাময়িক প্রেক্ষাপটে নওগাঁ জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের ভূমিকায় সকলের শীর্ষে। করোনা প্রতিরোধে অনেকটা যুদ্ধ করে যাচ্ছেন সরকারের এই দুটি দপ্তর বা সংস্থা। এদের দপ্তর ভিন্ন হলেও তাদের লক্ষ্য একটাই করোনা থেকে নওগাঁ বাসিকে মুক্ত রাখা। এজন্য নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ ও পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম এর নির্দেশনায় রাত দিন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন তারা ও তাদের অধিনস্তরা।

জানাগেছে, ‘করোনা মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ, গণসচেতনতা সৃষ্টি ও বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন থাকা যাচাইকল্পে জেলা প্রশাসক এর নির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট ও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া নওগাঁ জেলার প্রতিটি উপজেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারী আদেশ মেনে চলার জন্য কঠোর ভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। যারা সরকারের দিক নির্দেশনা মানছেন না তাদের আনা হচ্ছে শাস্তির আওতায়। এবং করা হচ্ছে জেল ও জরিমানা।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ বলেন, নওগাঁ সদরসহ এ জেলার ১১টি উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত আছে। করোনা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রচেষ্টাকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ, গণসচেতনতা সৃষ্টি ও বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার বিষয়ে সকলকে সচেতন করা হচ্ছে। এদিকে করোনা সংক্রমণ এড়াতে সরকারের নির্দেশ মেনে ঘরে থাকা কর্মহীন দরিদ্র মানুষের মাঝে নিজস্ব অর্থায়নে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে নওগাঁর বিভিন্ন সচেনত মহলসহ। পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম এর নির্দেশনায় পুলিশ সর্বত্র সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।

এছাড়া নওগাঁ জেলা পুলিশ এর পক্ষ থেকে সড়কে ছিটানো হয়েছে জীবাণুনাশক স্প্রে ও বিলিচিং পাউডার। শহরবাসী বলেন, সারা বিশ্বে করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমরা প্রায় সবাই আতঙ্কিত। মধ্যবিত্ত ঘরের মানুষরাও নিজেদের সাধ্যমতো নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু বিপাকে পড়েছেন অসহায় এবং খেঁটে খাওয়া মানুষ। নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ ও পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম কে ধন্যবাদ জানাই এ দু:সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার জন্য। নওগঁ পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম বলেন, করোনা এড়াতে সরকার সবাইকে নিজ নিজ ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। সরকারি নির্দেশ বাস্তবায়নে নওগাঁর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হয়েছে।

সরকারী নির্দেশ মেনে সবাইকে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করার আহবান জানান। এদিকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় থেমে নেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব-৫। তারাও করোনা ভাইরাস থেকে জনগণকে দূরে রাখতে এবং এর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। সচেতনতা কার্যক্রমের পাশাপাশি নিজেদের অর্থে কর্মহীন দুস্থদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন সরকারের এ দুটি ও সংস্থা।

 

আপনার মতামত লিখুন :