ভ্রাম্যমান ট্রাকে করে পন্য সামগ্রী বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ডিলাররা

প্রকাশিত : ২ এপ্রিল ২০২০

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি,০২ এপ্রিল।। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিন্ডিকেট করে নিজেদের ইচ্ছেমত টিসিবি’র নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করছেন ডিলাররা। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চাহিদা মত খাদ্য সামগ্রী কিনতে পারছেন না সীমিত আয়ের মানুষেরা। ভ্রাম্যমান ট্রাকে করে নির্ধারিত মূল্যে পন্য সামগ্রী বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ডিলাররা। টিসিবি’র পন্য বিক্রি প্রক্রিয়ায় যথাযথ তদারকি সহ স্বচ্ছতা না থাকায় টিসিবি’র কার্যক্রম স্বল্প আয়ের মানুষের কোন উপকারে আসছেনা বলে এমন অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, এ উপজেলার সীমিত আয়ের মানুষের জন্য পৌরশহরে লাইসেন্সধারী দু’জন ডিলার রয়েছে। কিন্তু কেউ ভ্রাম্যমান ট্রাকে করে কখনও পন্য সামগ্রী বিক্রি করছেনা। সিন্ডিকেট করে পৌরশহরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসে মাঝেমধ্যে টিসিবি’র পন্য বিক্রি করছে। ফলে স্বল্প আয়ের মানুষ তাদের প্রয়োজনের সময় টিসিবি’র ডিলারদের কাছ থেকে খাদ্য সামগ্রী কিনতে পারছেন না। এমনকি ডিলারের ঘরের সামনে ঘন্টাকাল সময় ধরে লাইনে দাড়িয়ে থাকা নিন্ম আয়ের মানুষেরা মাল বিক্রি শেষ হয়ে গেছে শুনে খালি হাতে বাড়ী ফিরছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরশহরের লতিফ ট্রেডার্স ও আলম ট্রেডার্স মার্চ মাসে বরিশাল ডিপো থেকে তেল, চিনি ও ডাল সামগ্রী দু’দফায় ১১টন ও ৭ টন উত্তোলন করেন। দু’জন ডিলার এসব পন্য আলাদা ভাবে ভ্রাম্যমান ট্রাকে করে মানুষের কাছে বিক্রি করার কথা থাকলেও তারা তা মানছেননা। পৌরশহরের ট্রলার ঘাটে অবস্থিত একটি ঘরে সীমিত ভাবে এসব পন্য বিক্রি করেছেন তারা। এছাড়া প্রতিবার এসব পন্য সামগ্রী ইউএনওকে জানিয়েই বিক্রী করা হয়েছে বলেও ডিলারদের দাবী।
টিসিবি’র পন্য কিনতে যাওয়া ইসমাইল নামের এক ক্রেতা বলেন, আমি ট্রলার ঘাটে দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে ৬০০ টাকায় ৬ লিটার ভোজ্য তেল ও ২ কেজি চিনি কিনেছি।

টিসিবি’র ডিলার লতিফ ষ্টোর’র স্বত্তাধিকারী লতিফ খালাশি জানান, তারা ইউএনওকে জানিয়ে দু’জন ডিলার একত্রে শহরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে টিসিবি’র পন্য সামগ্রী বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি চিনি ৫০ টাকা, ডাল ৫০ টাকা এবং তেল ৮০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৫ লিটার তেল, ৪ কেজি চিনি ও ১ কেজি ডাল কিনতে পারবেন। বর্তমানে তাদের পন্য সামগ্রী শেষ হয়ে যাওয়ায় ডিপো থেকে মাল ছাড়াতে তারা বরিশাল রয়েছেন। তারা ১২টন পন্য সামগ্রী ছাড় করতে ব্যাংকে টাকা জমা দিচ্ছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

টিসিবি’র ডেপুটি সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ও বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের অফিস প্রধান আনিচুর রহমান বলেন, ডিলারদের পৃথক ভাবে ট্রাকে করে ভ্রাম্যমান ভাবে টিসিবি’র পন্য সামগ্রী বিক্রি করতে হবে। সিন্ডিকেট করে কিংবা একই স্থানে বসে বিক্রি করার কোন নিয়ম নেই। এছাড়া টিসিবির নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে হবে। জেলা পর্যায়ে ডিসি ও উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও টিসিবি’র কার্যক্রমে তদারকি করবেন। বর্তমানে ডিপো থেকে ডিলারদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত তেল, ডাল ও চিনি সরবরাহ করা হচ্ছে। রমজান মাসের পূর্বে সোলা বুট সরবরাহ করা হবে।

কলাপাড়া ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, ‘টিসিবি’র ডিলারদের ডেকে নীতিমালা অনুসরন করে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পন্য সামগ্রী বিক্রির জন্য প্রাথমিক ভাবে সতর্ক করা হবে। এর ব্যত্যয় হলে পরবর্তীতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযুক্ত ডিলারদের লাইসেন্স বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

 

আপনার মতামত লিখুন :