নওগাঁর আত্রাইয়ে শ্যামা পূজা ও দীপাবলি উৎসব অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত : ৬ নভেম্বর ২০২১

সনাতন ধর্মার্লম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা(কালী পূজা)অনুষ্ঠিত।কার্তিক মাসের অমবস্যা তিথিতে সাধারণত এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। দূর্গা ও লক্ষী পূজা শেষে বাঙালী সনাতন ধর্ম বিশ্বাসী সকলের দূয়ারে গত বৃহস্পতিবারে হাজির শ্যামা পূজা বা কালী পূজা।বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য়ের মাধ্যমে শ্যামা পূজা পলন করছেন সনাতন ধর্ম বিশ্বসীরা। দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ধর্মীয়ি উৎসবটিতাদের কাছে কালী পূজা নামে পরিচিত। একইসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবারে ঘরে ঘরে উদযাপিত হচ্ছে দীপাবলী উৎসব।কার্তিক মাসের অমবশ্যা তিথিতে সাধারণত শ্যামা পূজা বা কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

হিন্দু পূরান মতে কালী দেবী দূর্গারই একটি শক্তি।সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’শব্দথেকে কালী নামের উৎপত্তি।কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়ের মধ্যেই রয়েছে কালী পূজার মূলবাতা বা মাহাত্ব।
কালপিূজার দিন হিন্দুরা সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে ওশ্নশানে প্রদীপ প্রজ্বলন করে পরলোকগত পিতা মাতা ও আত্নীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। এটিকে বলা হয় দীপাবলি।দীপাবলি সনাতনধর্মীদের উৎসববিশেষ এটি দেওয়ালি,দীপালিকা,সুখরাত্রি,সুখসপ্তিকা এবং যক্ষরাত্রি নামে অভিহিত। বাংলায় ‘দীপাবলি’ শব্দটি হিন্দি দিওয়ালি শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ প্রদীপের সারি।হিন্দু ধমানুসারীরা বিশ্বাস করে দীপাবলির আলোয় সকল অশুভ শক্তি দূর হয়ে ঘটবে শুভ শক্তির আবির্ভাব।

শুধু সনাতনধমীরাই নয়, শিখ এবং জৈন ধর্মাবলম্বীরাও এ উৎসব পালন করে। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে দীপাবলির দিনে কালী পূজা হয় তাই দীপাবলি ও কালী পূজাএকসাথে গাঁথা।রামায়ন অনুসারে দীপাবলি দিনে ত্রেতা যুগে শ্রীরাম রাবণ বধ করে চৌদ্দ বছরের বনবাস শেষে অযোধ্যা প্রত্যাবতন করেন।।শ্রী রামের চৌদ্দ বছর পরের প্রত্যাবতনেসারা রাজ্যজুড়ে প্রদীপ জ্বালানো হয়।প্রজারা খুশিতে শব্দবাজি করে।দীপাবলি মূলত পাঁচ দিন ব্যাপী উৎসব।দীপাবলীর আগের দিনের চতুদশী,এই দিনে শ্রী কৃষ্ন এবং তাঁর স্ত্রী সভ্যভামা নরকাসুরকে বধ করেছিলেন। চতুদর্শী পরের অমবস্যা তিথি দীপাবলী উৎসবের দ্বিতীয় দিন,কেন’ এই দিনই মূল হিসেবে উদযাপিত হয়।এই দিন রাতে শক্তি দেবী কালীর পূজা পূজা করা হয়।দীপা বলীর তৃতীয় দিন-কাল কার্তিকা শুদ্ধ। এই দিন অসুর বলি নরক থেকে বেরিয়ে পরিশুদ্ধহয়ে বিষঞুর বরে পৃথিবী শাসন করে। চতুথ দিন হচ্ছে ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া।এক যম দ্বিতীয়াও বলা হয়।এই দিন বোনেরা ভাইকে নিমন্ত্রণ করে, কপালে ফোটা দেয়,হাতে রাখি বেঁধে দেয়। দীপাবলির রাতে অনুষ্ঠিত হয় শ্যামা কালী পূজা। হিন্দু পূরাণ মতে কালী দেবী দূর্গারই একটি শক্তি।

কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা,আদ্য মা,তারা মা, চামুন্ডা,ভদ্রকালী,দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের মাধ্যমে ভক্তের জীবনে কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে পৃথিবীতে আগমন ঘটে দেবী শ্যামা বা কালীর।শ্যামা দেবী শান্তি,সংহতি ও সমপ্রীতি প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের প্রতীক। নওগাঁর আত্রাইয়ে হাটকালুপাড়া ইউনিয়নে দুই শত বছরের ঐতিহ্যবাহি শ্যামা পূজা বা কালীপূজা বান্দাইখাড়া কালী মন্দিরে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরেও উৎসাহ উদ্দীপনার মাঝে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পূজা মন্দির পরিদশন করেন উপজেলা নিবাহী অফিসার মোঃ ইকতেখারুল ইসলাম,উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ এবাদুর রহমান প্রামানিক, আত্রাই থানার তদন্ত ওসি মোজাম্মেল হক কাজী।

এসময় তাদের সাথে সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আত্রাই উপজেলা প্রেস ক্লাব সভাপতি কামাল উদ্দিন টগর, হাটকালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস শুকুর সরদার,আত্রাই উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ,খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ আত্রাই শাখার সাধারণ সম্পাদক অমেরেন্দ্র নাথ সাহা রনি, অজিত কুমার হালদার,আত্রাই পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য তপন কুমার, এসময় বান্দাই খাড়া শ্যামা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী অরুন কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা পরির্দশন কমিটির সহিত কুশল বিনিময় করেন। প্রমূখ। অনুষ্ঠান সূচিতে রয়েছে মায়ের আবাহন, বাল্য ভোগ, মায়ের পূজা ও ভোগরাগ,প্রসাদ বিতরণ, শ্যামা সংগীত ও ভক্তিমূলকগান,ধমীয় আলোচনা সভা।প্রদীপ প্রজ্বলন, চন্ড়ী পাঠ, শ্রী শ্রী শ্যামা মায়ের মহাপূজা ওফূজা শেষে পাঠা বলি। পূজা উপলক্ষে মন্দির সাজানো হয়েছে রঙ্গীন আলোয়। সন্ধ্যায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মন্ডপ সহ ঘরে ঘরে জ্বালানো হয় সহস্র প্রদীপ।

আপনার মতামত লিখুন :