আলামত নষ্ট করতেই পোড়ানো হয় মুসলিম স্ত্রীর লাশ

প্রকাশিত : ২২ আগস্ট ২০২১

নিজ হাতে পিটিয়ে হত্যার পর সাজান স্ট্রোকের নাটক। আর হত্যার আলামত নষ্ট করতে ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে নিজ ধর্মীয় প্রথায় দাহ করেন মুসলিম স্ত্রীর লাশ। চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে স্ত্রীকে হত্যা করে পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য দেন বাবলু দে। শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আঞ্জুমান আরার আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী জিয়া হাবিব আহসান।

তিনি বলেন, বাবলু চেয়েছিলেন স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামে থাকতে। তবে রাজি ছিলেন না স্ত্রী অ্যানী। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে অ্যানীকে থাপ্পড় দেন বাবলু। এতে তিনি অচেতন হয়ে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন। পরে একজন গ্রাম্য চিকিৎসক ডেকে আনলে তিনি অ্যানীকে মৃত ঘোষণা করেন। আইনজীবী আরো বলেন, হত্যার পর আলামত নষ্ট করতেই মৃত্যুর বিষয়টি কৌশলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনকে জানান বাবলু। পরে হিন্দু রীতিতে লাশটি সৎকার করেন। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি নিজেই এসব তথ্য দেন। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার জ্যৈষ্ঠপুরা বীণাপানি সংঘ পুজামণ্ডপ এলাকা থেকে বাবলুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে, ৩ আগস্ট একই এলাকার রণজিত দের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাবলুকে প্রধান আসামি করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোকাররমসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন অ্যানীর মা রোকসানা বেগম।

পারিবারের অনটন মেটাতে চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার বাসিন্দা ইয়াছমিন আক্তার অ্যানী। চাকরির সুবাদে বন্দরটিলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। কর্মস্থলে যাওয়া-আসার পথে একই এলাকার সেলুন কর্মচারী বাবলু দের সঙ্গে অ্যানীর পরিচয় হয়। বাবুল নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালে তারা বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দেড় বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :