ভাস্কর্য উদ্যান

প্রকাশিত : ৫ আগস্ট ২০২১

হৃদয় হাসান: ভাস্কর্য শীল্পের নিপুন কারিগর- কুদরত আলী ভাস্কর। প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা ও প্রশিক্ষন ছাড়া অর্জন করেছেন অসামান্য প্রতিভা। ঢাকার সন্নিকটে গাজীপুর জেলার ছোট্র গ্রাম মেঘডুবি। গ্রামের কোলঘেসে রয়েছে বিশাল এক দিঘি। দিঘির পাড়ে ছোট্র একটা পাহাড়ের মতো যায়গা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি ছোট্র পার্ক, পার্কের নাম ভাস্কর্য উদ্যান। এ উদ্যানের কারিগর-কুদরত আলী ভাস্কর।

পার্কটি সাজিয়েছেন নিজের মনের মতো করে, শুধু নিজের মনের মতো না সকল দর্শকের মনের মতো। পার্কের মনোরম দৃশ্য দেখলে যে কারো মন জুড়িয়ে যাবে, কি নেই এ পার্কে, বিভিন্ন রংয়ের বাহারী ফুলের গাছে ফুটে থাকা ফুল আপনার মন ভরিয়ে দিবে, আছে বিশাল আকৃতির গাছ ও বিভিন্ন রকমের শোভা বর্ধনকারী ছোট গাছ, আছে বিভিন্ন মহান ব্যাক্তিদের ভাস্কর্য ও সকল পশুপাখির ভাস্কর্য, বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বিশাল আকৃতির- বাঘ, হরিণ, জিরাফ, জেব্রা, হাতি, ঈগল পাখি ও নানা রকম প্রানীর ভাস্কর্য, বড়দের বিশ্রাম নেয়ার জন্য ছোট ছোট করে তৈরি করেছেন ঘুন্টি ঘর, যেখানে বসে আরাম করতে পারবেন, দিঘির পানিতে পা ভেজানোর জন্য নিজ খরচে পাকা ঘাট তৈরি করে দিয়েছেন এবং ঘাটের দুই পাশে বসিয়েছেন কুমিরের ভাস্কর্য। এসব ভাস্কর্য দেখে আপনার মনেই হবে না যে এগুলো আসল নয়, কুদরত আলীর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান এসব তিনি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে শিখেননি, ছোট বেলা থেকে তার সখই ছিল মাটি দিয়ে পশু পাখি বানানো, এসব করতে করতেই তিনি এখন একজন সফল ভাস্কর্য শিল্পী, এমন কোন প্রানী নেই যেটার ভাস্কর্য তিনি বানাতে পারেন না।

কারো মন খারাপ থাকলে ঘুরে আসতে পারেন কুদরত আলীর ভাস্কর্য উদ্যান থেকে আর শিশুদের জন্যতো এটা একটা স্বর্গ রাজ্য। এখানে ঢুকতে আপনাকে সামান্য এন্ট্রি ফি দিতে হবে, কিন্তু ভিতরে ঢোকার সাথে সাথেই আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন এন্ট্রি ফি অনেক কম, আরো বেশি হওয়া উচিৎ ছিল। এ বিষয়ে কুদরত আলী বলেন- সম্ভব হলে এ ফি ও আমি নিতাম না আমার এখানে তিনজন কর্মচারি সারাদিন কাজ করে তাদের বেতন দেয়ার জন্যই এ ফি টা নেয়া হয়, আমার মূল উদ্দেশ্য শিশুদের বিনোদন দেয়া।

আর কেউ যদি ভাস্কর্য কিনতে চায় সেটাই আমার আয়ের উৎস কিন্তু সেটাও খুবই সামান্য। কুদরত আলী ভাস্কর জানান তার মনের ইচ্ছা এই পার্কটাকে আরো বড়ো পরিসরে করা। সেটা যদি কারো ব্যাক্তি উদ্যোগে বা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হয় তবুও তিনি তার প্রতিভা দিয়ে শিশুদের আনন্দ দিতে চান।

আপনার মতামত লিখুন :