করোনায় লকডাউনে বিপাকে বরগুনার সহাস্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা!

প্রকাশিত : ৪ জুলাই ২০২১

মাইনুল ইসলাম রাজু, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। বরগুনার আমতলীসহ সারাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমন বিস্তার রোধে চলছে কঠোর লকডাউন। লকডউনের প্রভাবে বিপাকে পড়েছেন আমতলীর সহা¯্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ক্ষতির মুখে তাদের অনেকেই এখন ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। ঘুরে দাঁড়াতে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে প্রণোদনা প্যাকেজ বা ঋণ সুবিধা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।

আমতলী পৌর শহরের নুতন বাজার বাঁধঘাট চৌরাস্তা, একে স্কুল, বটতলা, পুরাতন বাজার, লঞ্চঘাট, ফেরীঘাট, বৌবাজার এবং উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া, মহিষকাটা, অফিস বাজার, গাজীপুর বন্দর, তালুকদার বাজার, খুরিয়াড় খেয়াঘাট, কলাগাছিয়া, গুলিশাখালী, কুকুয়া হাট ও ঘোজখালী বাজারের চা- বিস্কুট, পান- সিগারেট বিক্রেতা থেকে শুরু করে তৈরী পোষাক, ছিট কাপড়, টেইলার্স, জুতা, ক্রোকারিজসহ বিভিন্ন আইটেমের প্রায় সহা¯্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো মহামারি করোনায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই সকল ব্যবসায়ীরা।

একই অবস্থা বিরাজ করছে ফার্নিচার বিক্রেতা এবং মুদি মনোহরদি ব্যবসায়ীদেরও। বেচা বিক্রি কম হওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে দেনার পরিমাণ। সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করলেও কোন সুবিধা পাননি ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্যাকেজ বা ঋণ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আমতলী পৌর শহরে ভ্যানে ফেরী করে আম বিক্রি করেন আরাফাত হোসেন নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি জানান, ধার দেনা ও এনজিও থেকে সুদে টাকা এনে তিনি এ ব্যবসা শুরু করছেন। কঠোর লকডাউনের কারনে তার ব্যবসার অবস্থা তেমন একটা ভালো না। বাজারে কোন লোকজন নাই। যে আম বিক্রির জন্য ক্রয় করে এনেছি তা বক্রি করতে না পারায় পঁচে যাচ্ছে। তিনি আরো জানায়, আম বিক্রির আয় দিয়ে তার ৪ জনের সংসার চলে। এখন আম তেমন একটা বিক্রি না হওয়ায় পরিবার- পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়েছে।

সদর রোডের আরেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চা বিক্রেতা শ্যামল চন্দ্র বলেন, বাসায় বাবা ও মা অসুস্থ্য। ছোট্ট একটা চা-বিস্কুটের দোকান থেকে আয় রোজগারই আমার একমাত্র সম্বল। লকডাউনে দোকানটি বন্ধ থাকায় এখন অর্ধহারে অনাহারে আমাদের দিন কাটাতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যদি আমাদের কিছু আর্থিক সহায়তা দিতো তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো।

গালর্স স্কুল সড়কে ছোট একটি চায়ের দোকানের মালিক শাহাদুল বলেন, দোকানে দৈনিক ৫ থেকে ১ হাজার টাকা বিক্রি হয়। ওই বিক্রির টাকা দিয়েই আমার ৫ জনের সংসার চলে। লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় ছেলে মেয়ে নিয়ে সামনে কিভাবে চলবো তা নিয়ে টেনসানে আছি। তার উপড় আবার এনজিওর কিস্তির টাকার তো জ্বালা আছেই।

আমতলী তৈরী পোষাক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ নুরুজ্জামান প্রিন্স বলেন, কঠোর লকডাউনের কারনে আমাদের সকল তৈরী পোশাকের দোকানগুলো বন্ধ থাকায় আয় রোজগারও বন্ধ। শুনেছি সরকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করছেন। কিন্তু এর কোন সুবিধা আমরা পাইনি। ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্যাকেজ বা ঋণ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার জন্য জোর দাবি জানাই।

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, কারো পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিলে উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের বাড়ীতে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন :