প্রচন্ড বেপরোয়া মহেশপুরের ভূমি দস্যুরা, একের পর এক গিলে খাচ্ছে নদ-নদী গুলো

প্রকাশিত : ৯ মার্চ ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ: দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে ঝিনাইদহের মহেশপুরের ভূমি দস্যুরা। ফলে ভূমি দস্যুরা গিলে খাচ্ছে সীমান্তবর্তী এ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদীগুলো। জেলার মহেশপুর উপজেলা ও উপর দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব, কপোতাক্ষ, কোদলা, ইছামতি ও বেতনাসহ পাঁচটি নদ-নদী। কুষ্টিয়ার গড়াই থেকে ভৈরব ও মাথাভাঙ্গা নদী চুয়াডাঙ্গা হয়ে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরে প্রবেশ করেছে কপোতাক্ষ নদ।

এ নদটি জীবননগর থানার বকুন্ডিয়া, মারুফদা কোল ঘেষে মহেশপুর উপজেলার পুরন্দপুর, খালিশপুর, সাড়াতলা, কদমতলা, ফতেপুর, বেগমপুর, বৈচিতলা, মহেশপুর, ভালাইপুর, সুন্দরপুর, কোটচাঁদপুর হয়ে যশোর জেলার চৌগাছা, ঝিকরগাছা, কেশবপুর, সাগরদাড়ী চলে গেছে। মাইকেল মধুসুদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাড়ী কবি নদের কথা স্বরণ করেন ফ্রান্সের ভার্সই নগরে বসে বিখ্যাত কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি লেখেন। কবির লেখা কবিতার এ কপোতাক্ষ নদটি যুগ যুগ ধরে আমাদের নানাভাবে উপকার করে। সেই নদটির খালিশপুর বাজার ও মহেশপুর পৌরসভার অংশের দুই ধারে ভূমি দস্যুদের দ্বারা দখল হয়ে গেছে। ফলে এক সময়ের প্রবাহমান নদটি আজ মরতে বসেছে। এভাবে বছরের পর বছর দখল বেদখল হয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই। বাঁশবাড়িয়া ও কাজীরবেড়র ইউনিয়নের কোদলা নদীটি বিভিন্ন লোকজন দখল করে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে। যাদবপুর ও নাটিমা ইউনিয়নে বেতনা নদী প্রায় সবটুকু দখল হয়ে গেছে। স্বরুপপুর, শ্যামকুড় ও নেপা ইউনিয়নের ইছামতি নদী দখল বেদখলে এখন মরা খাল।

সরকার জেলা উপজেলায় নদ-নদী দখলদারকে উচ্ছেদের নির্দেশ দিলেও মহেশপুরে উপজেলা এখনও এটি কার্যকর হয়নি। বর্তমানে মহেশপুরে নদী দখল করে চলছে কৃষি আবাদ, পুকুর খনন, ঘর-বড়ী নির্মান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এ সকল দখলদাররা যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তখন তাদের ছত্রছায়ায় থাকে। এক শ্রেনীর রাজনৈতিক নেতারা পৃষ্টপোষক হিসেবে কাজ করে। স্থানীয় সচেতন মহল দাবী জানিয়েছে যেহেতু সরকার অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আন্তরিক ও হাই কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে সে ক্ষেত্রে শুষ্ক মৌসুমে দ্রæত নদী কমিশনের আইন অনুযায়ী জরিপ চালিয়ে নদীর জায়গা উদ্ধার এবং খনন করে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। মহেশপুর উপজেলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ও মহেশপুর সরকারী পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম খাইরুল আনাম জানান, একসময় এ উপজেলা উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদীতে পাল তোলা নৌকা চলতো।

সে সময় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল পানি পথ। এ ছাড়া নদীর দুক‚লে বসবাসকারীরা নদীর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন সে সব নদ-নদী দখল-বেদখলে মৃত্যু প্রায়। অনেক নদ-নদী ভরাট হয়ে গেছে। স¤প্রতি খাল নদ-নদী খনন কার্যক্রম কর্মসূচি গ্রহন করা আওয়ামী লীগ সরকারকে দন্যবাদ জানান প্রাক্তন এই প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুজন সরকার বলেন, যাদের বিরুদ্ধে নদী দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং এ বছরেই নদী জরিপ করে পুনঃখননের কাজ করা হবে বলে যোগ করেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :