এবার থাই সীমা’ন্তের দিকে ছুটছে বা’র্মিজ শরণা’র্থীরা

প্রকাশিত : ১৯ মার্চ ২০২১
ছবি : রয়টার্স

বিতর্কিত সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের বিভিন্ন শহর এবং উপশহর থেকে শত শত নাগরিক পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড সীমান্তের দিকে ছুটছেন। সীমান্ত এলাকায় জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপগুলোর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছেন তারা। এ ধরনের একটি গ্রুপের এক কর্মকর্তার বরাতে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বার্মিজ শরণার্থী ঢলের আশঙ্কায় প্রস্তুতি শুরু করেছে থাইল্যান্ড।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিয়মিতভাবেই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হচ্ছে সরকারি বাহিনী। এতে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। অ্যাডভোকেসি গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ২১৭ জন নিহত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বহু মানুষ শরণার্থী হিসেবে মিয়ানমার ছেড়ে থাইল্যান্ডের দিকে পালাচ্ছে।

থাই সীমান্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ)। জাতিগত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির এক কর্মকর্তা জানান তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রায় এক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। কেএনইউয়ের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান পাদোহ সাও টাও নি বলেন, আমাদের এলাকায় শত শত মানুষ রয়েছে। কেউ ধর্মঘটের নেতা, কেউ অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, সরকারি কর্মী…চাকরি ছেড়ে দেওয়া পুলিশ ও সেনা সদস্য, এছাড়াও বেশ কয়েক জন পার্লামেন্ট সদস্য এবং চিকিৎসকও রয়েছেন।

এছাড়া শান রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাতেও বেশকিছু সংখ্যক মিয়ানমারের নাগরিক আশ্রয় নিয়েছে বলেও জানান তিনি।মিয়ানমারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় বেশকিছু জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয়। এই গোষ্ঠীগুলোর অনেকেই সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে প্রতিরোধ আন্দোলনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রয়েছে কেএনইউ। পাদোহ সাও টাও নি বলেন, অভ্যুত্থানের আগে সরকারের সঙ্গে অস্ত্রবিরতির চুক্তি হলেও তা অচল হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আমরা জোরালোভাবে অসহযোগ আন্দোলন এবং মানুষের বিক্ষোভকে সমর্থন করছি।

এ দিকে মিয়ানমারের পালিয়ে যাওয়া নাগরিকদের আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে থাইল্যান্ড। মায়ে সোত জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায় ৪৩ হাজার মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর কর্নেল প্রসান হেনপ্রাসার্ট জানান সীমান্তে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংঘর্ষ হলে আমাদের আমাদের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে হবে এবং এলাকা প্রস্তুত করতে হবে। অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি পরিস্থিতি নিরাপদ হলে বহু মানুষ সীমান্ত পার হয়ে চলে যাবে কারণ সীমান্তের ওপারে তাদের বাড়ি রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :