জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে কুয়াকাটায় বালুর ভা’স্কর্য

প্রকাশিত : ১৭ মার্চ ২০২১

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় সৈকতে নির্মিত হয়েছে বালু ভাস্কর্য। বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্রে রেখে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস। রয়েছে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি জাতির ওপর পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতার নানা চিত্র। রাজশাহী ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা গত আটদিন ধরে এমন গল্প নিয়ে নির্মান করেছেন বালু ভাস্কর্য। পটুয়াখালী জেলা পুলিশ এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। আগামীকাল বুধবার ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে এ ভাস্কর্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৈকতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ বালু ভাস্কর্য বুধবার (১৭ মার্চ) বিকেল ৪ টায় উদ্বোধন করবেন বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার মো.শফিকুল ইসলাম (ডিপিএমবার পিপিএম)। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জেলা পুলিশ ও কুয়াকাটা পৌরসভা ভাস্কর্য লাগোয়া নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে নানা আয়োজনে টানা ১০ দিনের কর্মসূচির ঘোষনা দিয়েছেন। হোটেল-মোটেল ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে আলোকসজ্জাকরণ, মোমবাতি প্রজ্ব¡লনসহ ব্যানার ও ফেষ্টুন লাগানো হয়েছে। এছাড়া বুধবার সকালে বালুর ভাস্কর্যের সামনে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে জেলা পুলিশের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভাসহ স্থানীয় শিল্পী এবং শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

বালুর ভাস্কর্যে বাংলাদেশের মানচিত্রের ঠিক মাঝখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। ভাস্কর্যের শুরুতে স্থান পায় মহান ভাষা আন্দোলনের নানা চিত্র। এ ছাড়া ছয় দফা, নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি জাতির ওপর পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতার এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উল্লাসের চিত্র ফুটে উঠেছে। ভাস্কর্যের গায়ে অ আ ক খ থেকে শুরু করে লেখা, ‘আমার সোনার বাংলা’ ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, ‘মাতৃভাষা বাংলা চাই’ এমন নানা শ্লোগান। কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট অপারেটর টোয়াকের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটা সৈকতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরায় জেলা পুলিশের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সৈকতে নির্মিত এ ভাস্কর্যটি কুয়াকাটায় স্থায়ীভাবে কোথাও নির্মিত হলে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের গল্প জানতে ও শিখতে পারবে পর্যটকসহ নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা।

রাজশাহী বিশ্বকিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থী অনুপম ধর বলেন, চারুকলার ছয় শিক্ষার্থী গত ৯ মার্চ থেকে সৈকতে বালুচরে ভাস্কর্য নির্মাণ করছেন। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১০ ফুট প্রস্থের এ ভাস্কর্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন স্মরণে আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উল্লাস সবই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এ ভাস্কর্যে চোখ বুলালেই আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস সকলের চোখে পড়বে। তারা চেষ্টা করেছেন এক ফ্রেমে গোটা বাংলাদেশকে তুলে ধরতে। কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ১৭ মার্চ থেকে শুরু করে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনের কর্মসুচি হাতে নেয়া হয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মোহম্মদ শহীদুল্লাহ (পিপিএম) বলেন, বুধবার বিকেল ৪ টায় বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ সুপার বালুর ভাস্কর্যটি উদ্ভোধন করবেন। এরপর বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার পটভূমি নিয়ে আলোচনা শেষে কবিতা আবৃত্তি ও দেশত্ববোধক গান দিয়ে প্রথম দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে। ভাস্কর্যের প্রদর্শনী চলবে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন :