মেরুদন্ডে আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে স্টেমসেল থেরাপি

প্রকাশিত : ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের উদ্যোগে গতকাল সোমবার ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং তারিখে ইন্টারন্যাশনাল স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি দিবস (আন্তর্জাতিক মেরুদন্ডে আঘাপ্রাপ্ত দিবস) উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া। সভাপতিত্ব করেন নিউরোসার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ টি এম মোশারেফ হোসেন।

সেমিনারে গবেষণালব্ধ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুকৃতি দাস। সেমিনারে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, মেডিক্যাল অফিসার, রেসিডেন্ট চিকিৎসকবৃন্দ অংশ নিয়ে তাঁদের মূল্যবান মতামত দেন ও এ সংক্রান্ত জ্ঞানের আদান প্রদান করেন।

‘ম্যানেজমেন্ট অফ স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি এন্ড স্কোপ অফ স্টেমসেল থেরাপি’ শীর্ষক সেমিনারে জানানো হয়, কমপ্লিট স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির রোগীদের চিকিৎসাসেবায় আশার আলো দেখাচ্ছে স্টেমসেল থেরাপি। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্টেমসেল থেরাপি প্রয়োগ করে ৩২ জন রোগীর মধ্যে ৩১ জনেরই কমবেশি উন্নতি হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসাশিক্ষা ও গবেষণাকে এগিয়ে নিতে সব ধরণের সহায়তা করে যাচ্ছে। কোনো কোনো সময় মেরুরজ্জুর সামান্য আঘাতও বড় বিপর্যয় ডেকে আনে।

একজন মানুষ অচল হয়ে যায়, প্রতিবন্ধী হয়ে যায়, কর্মক্ষমতা হারিয়ে সমাজ ও পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। সড়ক দুর্ঘটনা, অল্পপানিতে ঝাঁপ দেয়াসহ যেসকল কারণে মানুষ স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির শিকার হয়ে থাকে সে বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির ক্ষেত্রে প্রতিরোধই প্রতিকার ও মুক্তির সর্বোত্তম পদ্ধতি। স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির চিকিৎসায় স্টেমসেল থেরাপিসহ আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত সকল ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি ও গবেষণায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা প্রদান করবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুকৃতি দাস জানান, স্পাইনাল কর্ডে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে যেসকল রোগীরা সম্পূর্ণ প্যারালাইজড হয়ে যায় সেকল রোগীদের চিকিৎসাসেবায় স্টেমসেল থেরাপি একটি অত্যাধুনিক পদ্ধতি। এই চিকিৎসাসেবা ব্যয়বহুল নয় এবং সাধারণ ব্যবস্থাতেই এটা চালু করা সম্ভব। বাংলাদেশে সকল মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সম্ভাব্য সকল মেডিক্যাল শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানে এটা চালু করা সম্ভব হলে অনেক দরিদ্র রোগীসহ কর্মক্ষম মানুষের সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত শারীরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

তিনি জানান, একটি প্রকল্পের আওতায় তিনি কমপ্লিট স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির শিকার ৩২ জন রোগীকে স্টেমসেল থেরাপি প্রয়োগ করে সুফল পেয়েছেন। ৩১ জন রোগীরই কমবেশি উন্নতি হয়েছে। যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অবশ্যই বড় ধরণের একটি সাফল্য। ছবি: মোঃ আরিফ খান। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।

 

আপনার মতামত লিখুন :