টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতার গোয়ালঘরে মিললো ছিনতাইয়ের সাড়ে ১৭ লাখ টাকা

প্রকাশিত : ১২ জুন ২০২০

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পোস্ট মাস্টারকে গুলি করে ছিনতাই করা ৫০ লাখ টাকার মধ্যে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইমান আলীর গোলালঘর থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ইমান আলী ও তার ছেলে ইমরান নাজিরকে উপজেলার গান্ধিনা গ্রামের বাড়ি থেকে গত বুধবার বিকেলে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই টাকা উদ্ধার করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার (১১ জুন) তারা টাঙ্গাইল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

ছিনতাই মামলার প্রধান আসামি কালিহাতী উপজেলা যুবলীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ওরফে সজীবের শ্বশুর বিএনপি নেতা ইমান আলী এবং ইমরান নাজির তার শ্যালক। পুলিশ সূত্র জানায়, ইমান আলী ও ইমরান নাজিরকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। ওই বাড়ির গরুর খাবার রাখার একটি ঘর থেকে বস্তায় রাখা সাড়ে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে দুজনেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। জবানবন্দিতে তারা জানান, ঘটনার পর সজীব তাদের বাড়িতে ৩০ লাখ টাকা রেখে যান। পরে দুই দফায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা নিয়ে যায়।

গত ১৭ মে কালিহাতী পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর-এর ৫০ লাখ টাকা তোলেন বল্লা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মুজিবর রহমান। পরে তিনি তার অফিসের রানার রফিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে কালিহাতী উপজেলা পোস্ট অফিস থেকে বল্লা পোস্ট অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হন। দুপুর ২টার দিকে তারা বল্লা তাঁত বোর্ডের কাছে পৌঁছলে অপর একটি মোটরসাইকেলযোগে তিন ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে পোস্ট মাস্টার মুজিবর রহমানের পায়ে গুলি করে ৫০ লাখ টাকার ব্যাগটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পোস্ট অফিস পরিদর্শক শেখ হোসেন জোবায়ের বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ওই দিনই কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে গত ২১ মে টাঙ্গাইল শহর থেকে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তানজিদুল ইসলাম ওরফে জিসানকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তিনি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, ওই ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনা করেন কালিহাতী উপজেলা যুবলীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ওরফে সজীব। ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জড়িত। এদিকে জিসান ও সজীবের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট দলের নেতারা।

কালিহাতী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মোল্লা বলেন, মনিরুল ইসলাম ওরফে সজীব সক্রিয়ভাবে কাজ করে না। তারপরও সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বলেন, পোস্ট মাস্টারকে গুলি করে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত জিসারকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :