নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা: ফের হামলার শিকার দুই সাংবাদিক

প্রকাশিত : ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সিটি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন মাছরাঙা টেলিভিশনের একজন সাংবাদিক ও ক্যামেরা পারসন। ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। আহতরা হচ্ছেন হাসনাইন তানভির ও সাইফুল ইসলাম। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাড্ডার বেরাইদে এ ঘটনা ঘটে।

 

জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আইয়ুব আনসার পিন্টু। জয়লাভ করার পর তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ওয়ার্ডভুক্ত বেরাইদ এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে যান হাসনাইন তানভির ও সাইফুল ইসলাম।

 

হাসনাইন তানভির বলেন, ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আইয়ুব আনসার পিন্টুর লোকজন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমি বেরাইদে গিয়ে ৫-৬টি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের দৃশ্য ধারণ করি। তিনি বলেন, সরেজমিন প্রতিবেদন শেষ করে বেরাইদ থেকে বের হয়ে আসার সময় আইয়ুব আনসার পিন্টুর লোকজন আমাদের গাড়ি ঘেরাও করে। তারা গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে। আমাকে ও ক্যামেরা পারসন সাইফুল ইসলামকে মারধর করে। এক যুবক নিজেকে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এই হামলা চালায়। এ সময় তারা আমাদের ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

 

এ বিষয়ে মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রাজা বলেন, ক্ষমতাসীন দলের এবং তাদের মদদপুষ্ট কিছু লোকজন এতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, যখনই তাদের অপকর্মের খবর সাংবাদিকরা তুলে ধরছেন তখনই তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। তবে, যতই হামলা হোক আমরা আমাদের কাজ করে যাবো। এ বিষয়ে আইয়ুব আনসারী পিন্টু বলেন, স্থানীয় একটা ক্লাবে নিয়ে গিয়ে কে বা কারা মাছরাঙা টিভির সাংবাদিককে মারধর করেছে বলে আমি জানতে পেরেছি। আমি ওই সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে অতি উৎসাহীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবর শুনেই আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। তাদেরও শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

প্রসঙ্গত, ঢাকার দুই সিটির মেয়র নির্বাচনের দিন ঢাকায় একাধিক সাংবাদিক ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীর লোকজন আগামী নিউজের স্টাফ রিপোর্টার মোস্তাফিজুর রহমান সুমনকে মারধর করে। এছাড়া গেন্ডারিয়াতে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর স্টাফ রিপোর্টার নূরুল আমীন জাহাঙ্গীর ও বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর স্টাফ রিপোর্টার মাহবুব মমতাজীকে লাঞ্ছিত করে তাদের দেড় ঘণ্টা আটকে রাখে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ। এর বাইরে আরও কয়েকটি ঘটনায় প্রেস বাংলাদেশ এজেন্সির জিয়াদ ইকবালসহ কয়েকজন সাংবাদিককে মারধর, লাঞ্ছনা করাসহ কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়া হয়।

 

 

আপনার মতামত লিখুন :