আতঙ্কিত বান্দরবানবাসী, ইউএনও ওসিসহ ৭জন কোয়ারেন্টাইনে, করোনা আক্রান্ত ৪

প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০২০

রিমন পালিত, বান্দরবান প্রতিনিধি: পাহাড়ী জেলা বান্দরবানে এক পুলিশ সদস্যসহ নতুন করে আরও ৩জন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হওয়ার ঘটনায় পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। আক্রান্তরা দুজন থানচি উপজেলায় ও একজন লামা উপজেলায়। এঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আশা থানছি ইউএনও, থানার ওসিসহ ৭ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়াও সদর হাসপাতালের একটি অংশ ও থানচি উপজেলার দুটি বাজার লকডাউন করে দেয়া হয়েছে।স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, থানচি সোনালী ব্যাংকের এক পুলিশ গার্ড ও একজন ঠিকাদার এবং লামায় এক নারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে বান্দরবানে মোট ৪জন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হলো।

এদিকে থানছি উপজেলায় দুজন করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পর তাদের সংস্পর্শে আসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ মোট ৭জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। থানছি উপজেলার সদর ও বলিপাড়া বাজার লকডাউন করা হয়েছে। দুপুরের মধ্যে থানা ভবন ও ব্যাংক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে ইউএনও আরিফুল হক জানিয়েছেন।

অপরদিকে লামা উপজেলায়ও করোনা আক্রান্ত নারীর বাড়িটি লকডাউন করেছে লামা প্রশাসন। লকডাউন করা হয়েছে বান্দরবান সদর হাসপাতালের একটি অংশ পুরোপুরি লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, থানছির আক্রান্তরা চিকিৎসা নিতে আসলে তাদের প্রথম তিনদিন ধরে সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়। পরে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। তাদের নমুনায় পজেটিভ আসে।

এদিকে ৪জন করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে পুরো জেলা জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে তিনদিন ধরে হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়ায় ঘটনায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বান্দরবান পৌর শহরে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, তিনদিন ধরে ঐ রোগী সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়ার সময় অন্যান্য রোগী, স্বজনরাও ঐসময় হাসপাতালে যাতায়াত করেন। এসব লোক তিনদিন বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছে। এখন কতজন আত্মীয়স্বজন ছিলেন ও তারা কোথায় কোথায় গেছেন এবং কাদের কাদের সাথে তারা মেলামেশা করেছেন। যদি তাদের মাধ্যমে বান্দরবানে আরো মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। এতে বান্দরবানবাসীর মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।

সবচেয়ে বেশি আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে পৌর শহরের বাসিন্দারা। স্থানীয়দের অভিযোগ হাসপাতালের ডাক্তারদের অবহেলার কারণে এধরণের ঘটনা ঘটেছে। তাদের কারণে এখন পৌর শহরবাসীর সবাই বিপদের মধ্যে পড়ে গেছে। লোকজন শুধু এখন আক্রান্ত হয়ে পড়ার আশংকায় ভয়ে চিন্তাগ্রস্ত রয়েছে।

এবিষয়ে বান্দরবান সিভিল সার্জন ডা. অংশৈ প্রু মারমা জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে এসব ব্যক্তির নমুনা চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার তাদের ফলাফল পজিটিভ আসে। বর্তমানে এদের মধ্যে দুজন হাসপাতাল কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। সিভিল সার্জন আরো জানান, সদর হাসপাতালে থানছির আক্রান্তদের মধ‍্যে একজন চিকিৎসা নেয়ায় হাসপাতালের একটি অংশ লক ডাউন করা হচ্ছে সেই সাথে যেসব চিকিৎসক ও নার্স রোগীর সংস্পর্শে ছিল তাদের কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামে পরীক্ষার সংখ‍্যা বেড়ে যাওয়ায় ফলাফল আসতে দেরি হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বান্দরবান জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, বান্দরবানে এ পর্যন্ত ১৯৫ জন হোম কেয়ারেন্টাইনে ও ১০জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এর আগে সীমান্ত উপজেলার নাইক্ষ্যংছড়িতে একজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।

আপনার মতামত লিখুন :