ইউএনওর হস্তক্ষেপে বে-আইনি ভাবে উত্তোল কৃত মাটির অর্থ উদ্বার সরকারি ফান্ডে জমা হবে !

প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০২০

শেখ সাইফুল ইসলাম কবির. সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট: বাগেরহাটে শরনখোলায় অবৈধ ভাবে লুটে নেওয়া মাটির অর্থ অবশেষে দিতে বাধ্য হচ্ছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না গুরুপ ।সরকারি সম্পদ রক্ষায় ইউএনওর উদ্যোগ প্রসংশনীয়। সম্প্রতি সরকারি জমির মাটি ক্রয় করা ছাড়াই অবৈধ ভাবে উত্তোলন করে নেওয়ার অভিযোগে চায়না গুরুপের খনন কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্থফা শাহিন। পরবর্তীতে,ইউএনওর সাথে এক বৈঠকে বসে উপজেলার বান্দাঘাটা ও পশ্চিম রাজৈর এলাকার সরকারি খাল থেকে উত্তোলন কৃত মাটির মূল্য পরিশোধের কথা স্বীকার করেন চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দ্বায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা ।

অনুসন্ধানে জানাযায়, ঝড় ,জ্বলোচ্ছাস ও বন্যা সহ প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগের হাত থেকে উপকুলবাসীকে রক্ষায় ২০১৭ সালে বলেশ্বর নদী সংলগ্ন ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩ কিঃ মিঃ দৈর্ঘ্যর বাঁধ নির্মান কাজ শুরু করেন (সি এইচ. ডাবব্লিউ) নামের চায়নার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। উক্ত বাঁধ নির্মান কালে মাটির ব্যাপক প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যাক্তিরা জেলা কিংম্বা উপজেলা প্রসাশনের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় কতিপয় স্বার্থেন্নেষী ব্যাক্তিদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে উপজেলা বাসীর পানির প্রধান উৎস রায়েন্দা সরকারি খালের বান্দাঘাটা এলাকা থেকে বাঁধের কোল ঘেষে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে গভীর কুপ তৈরী করেন এবং সেখান থেকে কয়েক লক্ষ ঘনফুট মাটি অবৈধ ভাবে লুটে নেয়। লুন্ঠিত ওই মাটির বাজার মূল্য লাখ লাখ টাকা বলে স্থানীয়রা জানায় । অপরদিকে, অতিরিক্ত গভীরতার কারনে বান্দা ঘাটা এলাকায় নির্মিত রায়েন্দা খালের প্রধান সুইজ গেইটটি সহ বাঁধের ওই এলাকা চরম ঝুকিপুর্ন হয়ে উঠেছে।

তবে, নাম গোপন করার শর্তে, বাঁধ সংলগ্ন এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও তাদের সহযোগীরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগসাজশ করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরকারি খাস জমি ,খাল, বিল ডোবা ও নালা সহ বাঁেধর পাশ থেকে হাজার হাজার ঘনফুট সরকারি জমির মাটি অবৈধ ভাবে বিক্রি করে তারা ইতোমধ্যে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন। কিন্তু বিগত দিনে প্রসাশনের দ্বায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের রহস্য জনক ভুমিকার কারনে ওই মাটি সহ অতিরিক্ত ক্ষতি পুরুনের নামে লুণ্ঠিত কোটি কোটি টাকার কানা কড়িও তখনকার সময় উদ্বার করেনি প্রসাশনের কেউ ।

যার কারনে বিগত দিনে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাট হয়েছে । এছাড়া ঠিকাদার গুরুপের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে বাঁধ সহ স্লুইজগেট গুলো টেকশই না হলে শরণখোলা বাসীর দুর্ভোগ থেকেই যাবে । সম্প্রতি বান্দাঘাটা ও পশ্চিম রাজৈর এলাকার দুটি সরকারী খালের মাটি চায়না ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করে দশ লক্ষাধিক টাকা হাতানোর পায়তারা শুরু করেন একটি স্বার্থেন্নেষী মহল কিন্তু বিষয়টি ইউএনওর হাতে ধরা পড়লে সটকে পড়ে ওই চক্রের সদস্যরা । এ ব্যাপারে , উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ আজমল হোসেন মুক্তা বলেন , সরকারি সম্পদ রক্ষায় (নবাগত) ইউএনওর উদ্যোগ প্রসংশনীয় ।

এছাড়া স্থানীয় কতিপয় সুবিধাবাদি ব্যাক্তির লোভের কারনে বাঁধের সু-ফল থেকে উপকুলবাসী বঞ্চিত হওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে । তবে, ভেরীবাঁধ নির্মানে যাতে কোন অনিয় ও দুর্নীতি না হয় সে ব্যাপারে সকলের কঠোর নজর দারী রাখা প্রয়োজন । অন্যথায় উন্নয়নমূখী সরকারের বদনাম হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্থফা শাহিন জানান, চায়না গুরুপ সম্প্রতি ২টি সরকারি খালের মাটি অবৈধ ভাবে তুলে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। বিষয়টি আমি স্থানীয়দের মাধ্যমে অবগত হয়ে মাটি খননের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেই । পরে ঠিকাদার সংশ্লিষ্টরা আমার সাথে বৈঠক করেছেন এবং সম্পুর্ন মাটি পরিমাপ করে তার টাকা পরিশোধের কথা স্বীকার করেছেন । উক্ত টাকা পেলেই সরকারী ফান্ডে জমা করা হবে।

এছাড়া বিগত দিনে আমি এ উপজেলায় কর্মরত ছিলাম না । তার পরেও সরকারি মাটি অবৈধ ভাবে বিকিকিনির সাথে জডিতদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হবে । প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান , মাটি ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়টি আমার দায়িত্বে নয় । তবে , চায়না গুরুপের মাটি ক্রয়কারী প্রতিনিধির পক্ষে মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন , চায়না কোম্পানী কয়েক বছর যাবৎ ৩৫/১ পোল্ডারের ভেরীবাঁধে কাজ করছেন । কিন্তু মাটি লুটের বদনাম নাই । সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুমতি নিয়েই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাটি গুলো সংগ্রহ করা হয়েছে । এছাড়া সরকারি ফান্ডে টাকা জমা দেওয়ার দ্বায়িত্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নয়।

আপনার মতামত লিখুন :