ডামুড্যায় প্রশাসনের আড়ালে বসছে হাটবাজার

প্রকাশিত : ৬ এপ্রিল ২০২০

মোঃ ওমর ফারুক , শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি: নভেল করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন যত ই প্রচারণা যত্রতত্র গণজামায়ত ও সামাজিক দূরত্ব গড়ে তোলার কথা টিভি, পত্রিকায় ও স্থানীয় ভাবে মাইকিং করেও এটি মানানো যাচ্ছে না। প্রশাসন হাট বাজার বন্ধ রাখার জন্য বললেও বন্ধ রাখা হচ্ছে না কোন হাট বাজার। যে যার মত ঘোরাঘুরি করছেন বিনা কারণে।

সরজমিনে দেখা যায়, ডামুড্যার কনেশ্বরের ইকরী পাকার মাথা, তিন খাম্বা বেতমড়া; পূর্ব ডামুড্যার চর নারায়পুর, বটতলা, সাইক্লোন সেন্টার, ২ নং বড় ব্রিজ, হাওলাদার বাজার, সম্ভুকাঠি বাজার; শিধুলকুড়ার শিধুলকুড়া বাজার, কামিজ উদ্দিন মার্কেট, তালতলা, কাজী মার্কেট, বাহেরচর, ধানকাঠির মডেরহাট বাজার, এতিমখানার মোড়, চাদের হাট বাজার, সিড্যার আমিন বাজার, মধ্য সিড্যার কোনা, তুলাতলা, ৬নং ওয়ার্ড মোড়, কল্লাকাটার মোড়; দারুল আমানের কাইলারার বাজার, জমাদ্দার বাড়ির গোজা, নরু চেয়ারম্যানের গোঁজা, পৌর সভার বড় ব্রিজ ঘাট, উত্তর বাজার, ধুপখোলা সহ উপজেলা প্রায় আরোও ৩০ টি পয়েন্টে জনসমাগম চোখে পড়ার মতো। এ ছাড়া সকালে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে লোকজন কিছুটা কম হলেও বিকালে যেন ঈদের আমেজ দেখা মেলে। করোনা ভাইরাস একটা তামাশার বিষয়।

সূত্র জানায়, দেশব্যাপী করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন গত ২৩ মার্চ (সোমবার) সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জনসমাগম না করতে এক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তবে ওষুধ ও নিত্যপণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত লোকজনকে বাহিরে ঘোরাঘুরি না করারও অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু এসব নিষেধাক্কাকে তোয়াক্কা না অবাধে চলাফেরা করছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষজন। এদের সাথে যোগ হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন।

যার পরিপ্রেক্ষিতে নিয়মিত ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব রেখে চলাচলের জন্য বলেন। তার পাশাপাশি তিনি লিফলেট বিতরণ করেন। এছাড়া বিদেশ ফেরত অনেকে ই এই আইন অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা আদায়ও করেন।
স্থানীয়রা বলেন, ঢাকা থেকে যে হারে দেশে লোক এসেছে। ঈদেও এত লোক দেশে আসে না। ঈদে অন্ততপক্ষে মুদি দোকানীরা ঢাকা থেকে যায়। কিন্তু এখন ভিন্ন চিত্র। আমরা এটি নিয়ে অনেক আতঙ্কিত। কখন কার ছোঁয়ায় এই রোগ টি হয়ে যায় বলা যায় না। অনেক ই বিদেশী লোক জনের সাথে কাজ করে। অনেক বিদেশী এই নিয়ম তোয়াক্কা না করে তখন থেকে ই ঘুরে বেড়িয়েছে। অনেক চায়ের দোকানাদার ভিতরে লোক রেখে সামনের ঝাপ আটকিয়ে রাখে। পিছন দিকে দরজা খোলা রাখে। এই সব দোকানে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ শত লোক যাতায়াত করে। দোকানদারদের কিছু বললে তারা হুমকি ধামকি দেয়।

সিড্যা আমিন বাজারে বাজার করতে আসা নুসরাত জাহান আন্তু ও তার মা রাবেয়া আক্তার হ্যাপি বলেন, ঘরে প্রয়োজনীয় মালামাল লাগবে বিধায় আমি বাজারে এসেছি। ঘরে বসে থাকলেতো খাবার ঘরে আর আপনা আপনি চলে আসবে না।
ডামুড্যা বন্দরের ব্যবসায়ী ফজলে রাব্বি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ডামুড্যা বাজার লক ডাউন রয়েছে। এই মধ্যে বাজারে যে পরিমাণ লোক জন আসছে দেখে মনে হয় ঈদের মৌসুম। এছাড়া সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে হাজার হাজার লোক জমায়েত হয়েছে। দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ডামুড্যা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে বারবার বলা হচ্ছে। করোনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিতরণ করা হচ্ছে লিফলেট। অব্যাহত প্রচার-প্রচারণার পরেও মানুষ সচেতন হচ্ছে না।

 

আপনার মতামত লিখুন :