এবারের মৌসুমে তরমুজ চাষে লাখপতি পটুয়াখালীর মানুষ

প্রকাশিত : ১৩ মার্চ ২০২৫

এবারের তরমুজ মৌসুমে পটুয়াখালীতে রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হয়েছে, যা বাজারে আনতে পারলে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া, চাষের আধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রশাসনের সহায়তায় কৃষকরা এবার অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় বেশি লাভবান হচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় ৫ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। বিশেষ করে গলাচিপা, রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলার কৃষকরা আগাম চাষ করে ভালো দাম পাচ্ছেন।কৃষকরা জানান, মাঠ পর্যায়ে প্রতি হেক্টর তরমুজ ৫ থেকে ৮ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা পাইকারি বাজারে ১০-১২ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পাশাপাশি এ বছর চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য থেকেও মুক্তি পাচ্ছেন তারা। তারপরেও কিছুটা লোকসান থেকে মুক্তি পেতে সরাসরি মাঠ থেকে পরিবহন ব্যবস্থার দাবি ব্যবসায়ীদের। একজন সফল চাষি আব্দুল গফুর বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো ছিল, সার, বীজ ও পানি পেয়েছি সময়মতো। তাই ফলন রেকর্ড পরিমাণ হয়েছে। এবার আমাদের কষ্ট সার্থক হয়েছে। এদিকে কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন দালালদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি, কৃষকরা যেন সরাসরি লাভ পায়, কোনো দালালের হাতে প্রতারিত না হয়।

পটুয়াখালী পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ জানিয়েছেন, চাষিরা যাতে নির্বিঘ্নে তরমুজ বাজারজাত করতে পারেন, সে জন্য পুলিশ প্রশাসন নৌ ও সড়কপথে চাঁদাবাজি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম বলেন, সঠিক সময়ে কৃষি উপকরণ, প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়ায় তরমুজ উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তাহলে তিন হাজার কোটি টাকার তরমুজ বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।

গত বছরের চেয়ে এবার বড় সাফল্য। গত বছর পটুয়াখালীতে ২৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল, তবে ভাইরাসজনিত কারণে কিছু ফসল নষ্ট হয়েছিল। এবার ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে, যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

এই সাফল্য পটুয়াখালীর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সঠিক বাজার ব্যবস্থা ও পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে তরমুজ চাষ আরও ব্যাপক হবে, যা পুরো দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আপনার মতামত লিখুন :