গলাচিপায় লেপ তোষক তৈরির হিড়িক বলে দিচ্ছে শীতের শুরু হচ্ছে

প্রকাশিত : ৩ নভেম্বর ২০২২

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর গলাচিপায় শীতের আমগনী বার্তা হিসেবে মানুষের মাঝে লেপ-তোষক তৈরির হিড়িক পড়েছে। তাই লেপ, তোষক, বালিশ, কোল বালিশ প্রভৃতি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। দিনে গরম রাতে ঠান্ডা আর ভোরে ঘাস লতার উপরে জমে থাকা হালকা শিশির বিন্দুই বলে দিচ্ছে শীতের আমগনী বার্তা। শীত আসার আগেই ঠান্ডা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

আর এ জন্য লেপ-তোষকের দোকানে বেড়েছে লেপ-তোষকের অর্ডার। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) গলাচিপা পৌর শহরের বিভিন্ন লেপ-তোষকের দোকান ঘুরে প্রায় একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। লেপ-তোষক ও কাঁথা তৈরি করেই গলাচিপা শহরে ও গ্রামে প্রায় দুই শতাধিক (নারী-পুরুষ) শ্রমিকরা টাকা উপার্জন করে সংসার চালাচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, কারিগররা নিজ নিজ বাড়ির উঠানে কেউবা খোলা জায়গায় বসে লেপ-তোষক ও কাঁথা তৈরি করছেন। তাদেরকে সহযোগিতা করছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। স্কুল কলেজের পরীক্ষা শেষ হওয়ায় এখন পিছিয়ে নেই স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরাও। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবা মাকেও সহযোগিতা করছেন তারা।

এসব সামগ্রী শহরের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করা হয়। তবে কারিগররা বলছেন এবছর আগের তুলনায় কাপড়, তুলার দাম বেড়ে যাওয়ায় লেপ-তোষক বানাতে খরচও বেশি পড়ছে। এ বিষয়ে লেপ-তোষক ব্যবসায়ী ভাষাণ মিয়া জানান, বর্তমানে প্রকার ভেদে লেপ-তোষক তৈরির কাপড় প্রতি গজে ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়া শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সাদা তুলা ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে দাম বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, আঁকার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ৪০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত মজুরী নেওয়া হচ্ছে।

কারিগর মনির, বাবু, ফাতেমা সহ অনেকে জানান, বাপ-দাদার দেখাদেখি আমরাও দুই যুগ ধরে লেপ-তোষক তৈরি করে আসছি। প্রতিদিন প্রায় ৬টি লেপ-তোষক তৈরি করা যায়। একেকটি লেপ-তোষক তৈরি করে মজুরী পাই ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এভাবে প্রতিদিন ৪শ থেকে ৫শ টাকা আয় হয়। যা দিয়ে সংসারের চাহিদা কিছুটা হলেও মেটানো সম্ভব হয়। তারা আরও বলেন, অর্ডার বেশি হওয়ার কারণে ৩-৪ জন কর্মচারী নিয়ে কাজ করতে হয়।

তাদেরকে প্রতিদিন ৩শ টাকা করে মজুরি দিই। তবে লেপ-তোষক তৈরির কারিগরদের দাবি, সরকারি ও বেসরকারিভাবে স্বল্প সুদে ঋণ পেলে ব্যবসা প্রসারিত করতে পারবেন তারা। এর ফলে সংসারে অভাব-অনটন দূর হবে। গলাচিপা শহরের লেপ-তোষক বিক্রেতা আ. ছালাম, ছোট্ট হাওলাদার সহ আরও অনেকে জানান, লেপ-তোষকের মান অনুযায়ী প্রতি লেপে ৮০ থেকে ৯০ টাকা লাভ হয়। তাতে দিন ঘুরে ৫ থেকে ৬টি লেপ-তোষক বিক্রি করে গড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকা উপার্জন হয়।

 

আপনার মতামত লিখুন :