মাকে হত্যার অভিযোগে সৎ বাবার বিরুদ্ধে ছেলের মামলা: গ্রেপ্তার ২
প্রকাশিত : ৯ আগস্ট ২০২২
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পরকীয়ার জেরে শাম্মী আক্তার (৪০) নামের এক বিউটিশিয়ানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার দ্বিতীয় স্বামী শেখ সিরাজুল সালেকীন এবং কে এম লতিফ ইনস্টিটিউশনের শিক্ষিকা ও শাম্মীর ভাবি আয়শা খানমের বিরুদ্ধে।
সোমবার ভোররাতে মঠবাড়িয়া শহরের ভাড়া বাসায় শাম্মী আক্তারকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার শাম্মী আক্তারের ছেলে এবং কে এম লতিফ ইনস্টিটিউশনের শিক্ষার্থী সাইম আলম তার সৎ বাবা ও তার বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার বিরুদ্ধ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১২ বছর পূর্বে শাম্মীর সাথে তার প্রথম স্বামী ফিরোজ আলমের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর থেকে শাম্মী তার দুই সন্তানকে নিয়ে মঠবাড়িয়া শহরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং কে এম লতিফ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় একটি বিউটি পার্লার চালাতেন।
দুই বছর আগে শাম্মীর সাথে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের সিরাজুলের বিয়ে হয়। ঢাকায় বসবাসকারী সিরাজুল মাঝেমধ্যে মঠবাড়িয়ায় এসে শাম্মী সাথে থাকতেন। এরই মধ্যে সিরাজুলের সাথে শাম্মীর ভাবি আয়েশার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে বিষয়টি সকলের কাছে অজানা ছিল।
গত সোমবার দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করতে মঠবাড়িয়ায় আসে সিরাজুল। ওই রাতে শাম্মীর বাসায় আয়শাও বেড়াতে আসে। রাতে শাম্মী ঘুমিয়ে পড়ার পর সিরাজুল পাশের কক্ষে আয়েশার কাছে চলে যায়। রাতে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে শাম্মী তার স্বামীকে না পেয়ে পাশের কক্ষে গিয়ে তাকে অপ্রীতিকর অবস্থায় দেখতে পায়। তখন রাগান্বিত হয়ে সিরাজুল ও আয়শাকে গালিগালাজ করে শাম্মী। এতে আয়েশা ক্ষিপ্ত হয়ে শাম্মীর মুখ চেপে ধরে এবং আঘাত করে। এরপরেও শাম্মী শান্ত না হওয়ায় সিরাজুল তাকে খাটের ওপর ফেলে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
পরবর্তীতে সকালে শাম্মীকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় আয়শা ও সিরাজুল। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় শাম্মীর স্বজনরা মঠবাড়িয়া থানায় খবর দেয় এবং পুলিশ মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল জানান, তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।