কৃষকের মুখে হাসি গলাচিপায় তরমুজের বাম্পার ফলন

প্রকাশিত : ২৪ মার্চ ২০২০

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: গলাচিপায় তরমুজের বাম্পার ফলন উৎপাদন পাঁচ শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে পটুয়াখালীর দক্ষিণের দুই উপজেলা গলাচিপা ও রাঙ্গাবালীতে এবার তরমুজের বাম্পার হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, তরমুজের উৎপাদন পাঁচ শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এরইমধ্যে ক্ষেতে উৎপাদিত তরমুজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। শুরুতে দামও মিলছে বেশি। ফলে তরমুজ উৎপাদনে জড়িত চাষীদের চোখে-মুখে বইছে খুশির ঝিলিক।

মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে, এক দশক আগেও পটুয়াখালী অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হাইব্রিড তরমুজের খুব বেশি চাষ হতো না। গত কয়েক বছরে এ চিত্র পাল্টে গেছে। কম সময়ে বেশি লাভ, কৃষকদের আগ্রহ, কৃষি বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহ ও তৎপরতা এবং হাতের কাছে সার, বীজ, কীটনাশকসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পৌঁছে যাওয়ায় গত কয়েক বছরে তরমুজ চাষ ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার গলাচিপা উপজেলায় ৬ হাজার ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বহু তরমুজচাষী বোরো আবাদে ঝুঁকে পড়েন।

এরপরেও দুই উপজেলায় এবার সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। এদিকে, সরেজমিনে গলাচিপার তরমুজ চাষী হাজী মো. চুন্নু মিয়া এর ক্ষেতসহ কয়েকটি তরমুজ ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে এরই মধ্যে এলাকার উৎপাদিত তরমুজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ সপ্তাহেই বাজারে আসা তরমুজের পরিমান কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। বর্তমানে অধিকাংশ তরমুজ চাষী ও কৃষি শ্রমিক তরমুজ চাষের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। পানি সেচ ও পোকা মাকড় দমনে কাটছে ব্যস্ত সময়। চুন্নু মিয়া জানান, ৪০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে প্রায় ৪০ লাখ টাকা বিক্রি হতে পারে। কিন্তু তিন চার দিন আগে অতিরিক্ত রোদের তাপে ক্ষেতে লবন উঠে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তা না হলে এ বছর কমপক্ষে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা বিক্রি হত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, প্রতি হেক্টরে ৩৫ মেট্রিক টন হিসেবে দুই উপজেলায় প্রায় সাড়ে চার লাখ টন তরমুজের ফলন হবে। যার বর্তমান বাজার মূল্য পাঁচ শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি আরও জানান, প্রতি একরে ৫০ হাজার টাকা হিসেবে তরমুজ চাষে চাষীরা দেড় শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। চার মাসের ব্যবধানে এর বিপরীতে চাষীরা অন্তত সাড়ে তিন শ’ কোটি টাকা লাভ করবে। অল্প সময়ে ব্যাপক লাভ চাষীদের তাই তরমুজ চাষে ব্যাপক উদ্ধুদ্ধ করেছে।

 

আপনার মতামত লিখুন :