ভয়ংকর মাদক এলএসডি সেবন করেন হেলেনাকন্যা!

প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০২১

লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড বা এলএসডির মতো ভয়ংকর মাদক সেবন করেন আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ থেকে বহিষ্কৃত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের মেয়ে জেসিয়া আলম। শুধু তাই নয়, তিনি মদপানের পাশাপাশি গাঁজাও সেবন করেন। জানা গেছে, পরিবার থেকে মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার জন্য পাঠানো হলেও তা শেষ করতে পারেননি জেসিয়া। বিদেশে থাকা অবস্থায় মদসহ বিভিন্ন মাদকে আসক্ত হন তিনি। পরে দেশে এসেও প্রতিনিয়ত এলএসডি, গাঁজা, মদসহ বিভিন্ন মাদকের সঙ্গে জড়িত হন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের বাসায় অভিযানের সময় হেলেনা কন্যার রুম থেকে তিন বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। এসব মদ তিনি নিজে র‌্যাবকে বের করে দেন। সেখানে গাঁজা সেবনেরও কিছু সরঞ্জাম দেখা যায়। অভিযানে থাকা র‌্যাবের একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে।

সম্প্রতি ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসায় তাকে উপ-কমিটির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরে বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যে হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় এলিট ফোর্স র‌্যাব। অভিযানে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, বিদেশি মুদ্রা, হরিণের চামড়া, চাকু ও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে আটক করে র‌্যাব সদরদপ্তরে নেয়া হয়। হেলেনা জাহাঙ্গীরের দুই মেয়ে, এক ছেলে। অভিযানের সময় হেলেনার দুই মেয়ে সেখানে ছিলেন। বাড়িটির চারটি ফ্লোরে বসবাস ছিল হেলেনার। সেখানে ১৭টির বেশি রুম রয়েছে। অভিযানে মেয়ে জেসিয়ার রুম থেকে বিদেশি মদের ছোট তিনটি বোতল উদ্ধার করা হয়। এসব তিনি নিজেই বের করে দেন। এছাড়া ভয়ংকর মাদক এলএসডি সেবন করতেন জেসিয়া। অভিযানের সময় নিজেই বলেন, ‘এলএসডি উড়াতে হবে।’ জেসিয়ার রুমে অন্যান্য মাদক সেবনের সরঞ্জামও পাওয়া যায়।

এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর ভয়ঙ্কর মাদক ‘এলএসডির’ বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন সময় এই মাদকসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে। বিদেশ থেকে পার্সেল কুরিয়ার বা ল্যাগেজে এই মাদক দেশে এনে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হতো। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা এই মাদকে আসক্ত হন বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হেলেনা জাহাঙ্গীরের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই একটু মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন জেসিয়া। এরপর তাকে পড়াশোনার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়। সেখানে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন মাদকে জড়িয়ে পড়েন। পরে পড়াশোনা শেষ না করেই দেশে ফিরে আসেন। বিভিন্ন সময় নিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর তাকে ভালো পথে আনার চেষ্টাও করেন। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতের অভিযানে মদের বোতল উদ্ধারের বিষয়ে মেয়ে জেসিয়া আলমের ভাষ্য, ‘এসব তার ভাই সেবন করতেন। সেগুলোই বাসায় ছিল।’ হরিণের চামড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেসিয়া বলেন, ভাইয়ার বিয়ের সময় মায়ের সঙ্গে রাজনীতি করা নেতানেত্রীরা মিলে ওইটা গিফট করেছে। সেটি ওয়ালে ঝোলানো ছিল। অভিযানে র‌্যাবের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, আমরা বাড়িটি তল্লাশির সময় মাদকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করি। এসময় হেলেনা কন্যার রুম থেকে মদ উদ্ধার করা হয়। সেসময় তিনি এলএসডি সেবনের বিষয়টি জানান। তবে রুম সার্চ করে এলএসডি উদ্ধার করা যায়নি। এছাড়া বিভিন্ন সময় বন্ধুদের সঙ্গে মেসেজ আদান-প্রদানে এলএসডি সেবনের তথ্য মিলেছে।

আপনার মতামত লিখুন :