ফাইনাল খেলার শিরোপার উল্লাসে মেতে উঠল অস্ট্রেলিয়ান মেয়েরা

প্রকাশিত : ৮ মার্চ ২০২০

নিয়মিত ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতার প্রতিফলনই যেন পড়ল ম্যাচে। ব্যাটে-বলে দাপুটে ক্রিকেট খেলল মেয়েদের ক্রিকেটের পরাক্রমী দল অস্ট্রেলিয়া। ভারত পারল না লড়াই জমাতেও। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রেকর্ড ৮৬ হাজার দর্শকের সামনে শিরোপার উল্লাসে মেতে উঠল অস্ট্রেলিয়ান মেয়েরা। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে রোববার ভারতকে ৮৫ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার অ্যালিসা হিলি ও বেথ মুনির বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালের রেকর্ড রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। ১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৯৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় ভারত।

টুর্নামেন্টের সাত আসরে এই নিয়ে পঞ্চমবার চ্যাম্পিয়ন হলো অস্ট্রেলিয়ান মেয়েরা। স্ত্রীর ফাইনাল দেখতে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজ থেকে ছুটি নিয়ে মেলবোর্নে এসেছিলেন মিচেল স্টার্ক। হিলি যেন সাজালেন নৈবেদ্য, ৭ চার ও ৫ ছক্কায় খেললেন ৩৯ বলে ৭৫ রানের ইনিংস। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বেথ মুনির ব্যাট থেকে এসেছে ৫৪ বলে ১০ চারে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংস। এই সংস্করণের বিশ্বকাপ ফাইনালের এটি সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। আগের সর্বোচ্চ এই ম্যাচেই করেন হিলি। এই ম্যাচের আগে সর্বোচ্চ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের হেইলি ম্যাথিউসের ৬৬। অফিসিয়াল হিসেবে ফাইনালের দর্শ ছিল ৮৬ হাজার ১৭৪। ক্রিকেট তো বটেই, অস্ট্রেলিয়ায় মেয়েদের যে কোনো ক্রীড়া ইভেন্টে সবচেয়ে বেশি দর্শকের রেকর্ড এটি। অস্ট্রেলিয়া জয়ের ভিত গড়ে ফেলে প্রথম ইনিংসেই। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে হিলি-মুনির ১১৫ রানের উদ্বোধনী জুটিই ছিল ম্যাচে ভাগ্য নির্ধারক। বড় লক্ষ্য তাড়ায় মেগান শুট, জেস জোনাসেনদের আগুনে বোলিংয়ে পুড়ে ভারতীয় ব্যাটিং। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ফাইনালের সেরা বোলার শুট।

জোনাসেন নিয়েছেন তিনটি।অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংয়ে নেমেছিল টস জিতে। প্রথম ওভার থেকেই তা-ব চালান মেয়েদের ক্রিকেটের অন্যতম বিধ্বংসী ব্যাটার হিলি। ইনিংসের পঞ্চম বলে ৯ রানে জীবন পেয়ে তিনি হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। আইসিসি৩০ বলে তিনি স্পর্শ করেছেন ফিফটি। মেয়েদের ক্রিকেটে তো বটেই, ছেলেদের ক্রিকেটেও কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে এর চেয়ে কম বলে ফিফটি নেই আর কারও। দ্বাদশ ওভারে হিলির ঝড় থামাতে পারে ভারত। আগের ওভারেই শিখা পান্ডেকে হ্যাটট্রিক ছক্কা মারেন হিলি। পরের ওভারে রাধা যাদবকে আবার ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে ধরা পড়েন লং অনে।হিলির বিদায়ের পর অধিনায়ক মেগ ল্যানিং টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। দ্রুত ফেরেন অ্যাশলি গার্ডনারও। এক ওভারে দুই জনকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার রানের গতিতে কিছুটা রাশ টানেন অফ স্পিনার দিপ্তি শর্মা।

কিন্তু একপ্রান্তে রানের চাকা ঠিকই সচল রাখেন মুনি। ৮ রানে জীবন পাওয়া এই ব্যাটার ৪১ বলে করেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত খেলে দলকে এনে দেন বড় পুঁজি। ভারতের ব্যাটিংয়ে স্পষ্ট ছিল চাপের প্রভাব। ব্যাটাররা যেন ক্যাচ অনুশীলন করাচ্ছিলেন অস্ট্রেলিয়ানদের। রান রেটের দাবি মেটাতে গিয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারান তারা। ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটারের একজন যেতে পেরেছেন দুই অঙ্কে। মাথায় বলের আঘাতে তানিয়া ভাটিয়া মাঠ ছাড়েন। পরে তার পরিবর্তে ব্যাটিংয়ে নামেন রিচা ঘোষ। তিনি করেন ১৮ রান। অলরাউন্ডার দিপ্তি ব্যাট হাতেও লড়াই করেন কিছুটা। কিন্তু তার ৩৩ রানের ইনিংস কেবল ব্যবধানই কিছুটা কমাতে পেরেছে। তার পরও অস্ট্রেলিয়া জিতেছে বড় ব্যবধানে।

আপনার মতামত লিখুন :