পদ্মায় নৌকা ডুবি কনেসহ সাতটি লাশ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ এক

প্রকাশিত : ৯ মার্চ ২০২০

রাজশাহীর পদ্মা নদীতে বর-কনেবাহী দুটি নৌকাডুবিতে নিখোঁজ থাকা কনে সুইটি খাতুন পূর্ণিমা (১৬) ও শিশু রুবাইয়া আক্তার স্বর্ণার (১৩) লাশ পাওয়া গেছে। রোববার (০৮ মার্চ) দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে রাজশাহীর লালন শাহ্ মুক্তমঞ্চের সামনে পদ্মা নদী থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। এ নিয়ে এই দুর্ঘটনার পর নদী থেকে সাতটি লাশ উদ্ধার করা হলো। তবে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন কনের খালা আখি খাতুন (২৫)। রোববার উদ্ধার হওয়া কনে পূর্ণিমা রাজশাহীর পবা উপজেলার ডাঙেরহাট গ্রামের শাহিন আলীর মেয়ে ও শিশু রুবাইয়া কনে পূর্ণিমার ফুফাতো বোন বলে জানা গেছে।

এর আগে যাদের লাশ উদ্ধার হয়েছে তারা হলেন- পূর্ণিমার চাচা শামীম হোসেন (৩৫), তার স্ত্রী মনি খাতুন (৩০), তাদের মেয়ে রশ্নি খাতুন (৭), কনের খালাতো ভাই এখলাস হোসেন (২৮), দুলাভাই রতন আলী (৩০) এবং তার মেয়ে মরিয়ম খাতুন (৬)। জানা গেছে, দেড় মাস আগে পদ্মার ওপারে একই উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামের ইনসার আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান রুমনের (২৬) সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিন্তু তখন অনুষ্ঠান হয়েছিল না। গত বৃহস্পতিবার কনের বাড়িতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। সেদিন বরপক্ষ কনেকে চরে নিয়ে যায়। প্রথা অনুযায়ী, পরদিন শুক্রবার কনেপক্ষের লোকজন বর এবং কনেকে আবার কনের বাড়িতে নিয়ে আসছিলেন। তখন রাত ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার বিপরীতে মাঝপদ্মায় দুটি নৌকায় ডুবে যায়। দুটি নৌকায় প্রায় ৪০ জন যাত্রী ছিলেন। নৌকাডুবির পর ছোট আরেকটি নৌকা এবং বালুবাহী একটি ট্রলার ভাসমান মানুষদের উদ্ধার করে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আবদুর রউফ বলেন, ডুবে যাওয়া নৌকা দুটিই উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও একজন নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করেছেন কনের পরিবার। যার সন্ধােেন যৌথভাবে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে দলকল বাহিনী, বিজিবি, নৌ-পুলিশ ও বিআইডাব্লুটিএ’র ডুবুরি দল। এ ঘটনায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, ইতিমধ্যেই নৌকা ডুবির ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর নিখোঁজদের উদ্ধারে দমকল বাহিনী, বিজিবি, নৌ-পুলিশ ও বিআইডাব্লুটিএ অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়াও পদ্মাপাড়ে নিখোঁজ ও হতাহতের অনুসন্ধান এবং উদ্ধার কার্যক্রম সমন্বয়ে কেন্দ্র খোলা হয়েছে। নিহতের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আহতের চিকিৎসা ব্যয় বহন সরকার করবে।

তদন্ত কমিটির প্রধান আবু আসলাম বলেন, দুই নৌকায় ধাক্কা পর নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। আর তখনই ঝড় বাতাস উঠলে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে নড়াচড়া করলে নৌকায় পানি উঠে যায়। এছাড়াও আতঙ্কিত হয়ে এক নৌকা থেকে আরেক নৌকায় লাফিয়ে উঠতে গেলে দুইটি নৌকায় ডুবে যায়। তবে সে সময় ওই দিক দিয়ে একটি বালুবাহী বোর্ড যাচ্ছিল। তারা অনেককে উদ্ধার করেছে এবং অন্যরা সাঁতার কেটে পাড়ে উঠেন।

 

 

আপনার মতামত লিখুন :