কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় আমরা ন্যায় বিচার পাবো

প্রকাশিত : ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি:সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় সাফাই সাক্ষ্য দিয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ন্যায় বিচার পাবেন বলে মন্তব্য করেছেন। মামলার অন্যতম প্রধান আসামি বিএনপি নেতা সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবীরের আদালতে তিনি এই সাফাই সাক্ষ্য প্রদান করেন। আগামী ৬ জানুয়ারি আলোচিত এই মামলার যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

সাতক্ষীরা জজকোর্টের পিপি এড. আব্দুল লতিফ জানান, বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর সাফাই সাক্ষ্য প্রদান ও জেরা করার মাধ্যমে শেষ হলো আলোচিত এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম।

সাফাই সাক্ষ্য দিতে এসে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টায় তিনি নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের ৫ম তলায় জাতীয়তাবাদি স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার বিএনপি নেতা ও সাংসদ হাবিব। জুম্মার দিন তাই দুপুর ১২টা পর্যন্ত সভা চলেছিল।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন বাংলাদেশের অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, সহকারি এটর্ণি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, অ্যাড. এসএম হায়দার আলী, সাবেক পিপি অ্যাড. তপন কুমার দাস, সাবেক পিপি অ্যাড. ওসমান গনি, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, অ্যাড. শহীদুল ইসলাম পিন্টু, অ্যাড. নাজমুন্নাহার ঝুমুর প্রমুখ।
এদিকে বিএনপি’র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাফাই সাক্ষ্য শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আশা করছি ন্যায় বিচার পাবো। ঘটনার দিন হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঢাকাতে ছিলেন।
প্রসঙ্গত ঃ ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে আসেন। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৭০/৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে স্বাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ সফিকুল ইসলাম।

সাতক্ষীরা চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামীপক্ষের আপীল আবেদনে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চতর আদালত। এরপর রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী মামলাটি বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বৃহষ্পতিবার আদালতে ৩৪ জন আসামী হাজির ছিলেন।

সে অনুযায়ি ২০ জন সাক্ষী ও চার জন সাফাই সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে আগামী ৬ জানুয়ারি পেনাল কোর্ডের মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর। তবে ৬ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষ করা না গেলে পরদিন ওই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলেও একই আদেশে বলা হয়

আপনার মতামত লিখুন :