নারায়ণগঞ্জে ১৪ বিঘা জমি দখল করলেন হাজী সেলিম, অবশেষে উদ্ধার

প্রকাশিত : ২ নভেম্বর ২০২০

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় হাজী সেলিমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন। রোববার বিকেলে এই অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল মামুন। এ সময় উচ্ছেদ অভিযানকারী দলের সঙ্গে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আল মামুন জানান, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদিনা গ্রুপের অবৈধ যতগুলো স্থাপনা ছিল সেগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। এর মধ্যে ২ দশমিক ১১ একর পরিমাণ দুই জায়গায় তিনটি স্থাপনা ভেঙে দিয়েছি।

বাকি একটি স্থাপনা খুবই ভারি ও শক্তিশালী হওয়ায় সেটা ভাঙতে ভেকুতে সমস্যা হয়েছে। যে কারণে আমরা উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে দেই। তিনি বলেন, যে জায়গাগুলো আমরা দখলমুক্ত করেছি সেসব স্থানে লাল নিশান টানিয়ে দিয়ে এসেছি। তবে বাকি যে স্থাপনাগুলো অবৈধ দখলে রয়েছে সেগুলো অপসারণ করতে আমরা তাদের তিন দিন সময় দিয়েছি। তারা স্থাপনাগুলো নিজে থেকে সরিয়ে না নিলে আমরা পুনরায় উচ্ছেদ অভিযান চালাব। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা শিল্পনগরীর ইসলামপুর এলাকায় অবস্থিত মদিনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান টাইগার সিমেন্ট ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে মদিনা গ্রুপসহ কয়েকটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার জন্য চর রমজান সোনাউল্লাহ মৌজায় দিয়ারা ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত ৭৪১০, ৭৪১২, ৭৪১৪, ৭৬২৮, ৭৬৩৫, ৭৬৩৬, ৭৬৪৪, ৭৬৪৫, ৭৬৫৩ ও ৭৬৫৭ দাগে ১ দশমিক ০৮৪৪ একর এবং ৯৬০১ দাগে ২ দশমিক ৩৩২০ একর ভূমি অবৈধভাবে বালু ফেলে দখল করে নেয়। দখল করা সম্পত্তি স্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট মদিনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী সেলিম তার কোম্পানির প্যাডে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন।

ওই আবেদনের পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তাকে সম্পত্তি স্থায়ী বন্দোবস্ত না দিলেও সংসদ সদস্যের প্রভাব খাটিয়ে হাজী সেলিম দেয়াল নির্মাণ করে তা দখলে নিয়ে নেন। ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে মদিনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী সেলিমকে এ ব্যাপারে সরকারি সম্পত্তি অবৈধ দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়।

সম্প্রতি ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতারের পর থেকেই হাজী সেলিম আত্মগোপনে চলে যান। পরে তার বিরুদ্ধে একে একে দখলের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। এর পর থেকেই তার দখলে থাকা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করা হয়।

আপনার মতামত লিখুন :