নৌযান শ্রমিকদের ১৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর ২০২০

নৌযান শ্রমিক কর্মচারীদের খাদ্যভাতা নির্ধারণ করে চলতি বছরের মার্চ থেকে কার্যকর করা সহ ১৫ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছে নারায়ণগঞ্জের নৌযান শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকালে নারায়ণগঞ্জের ৫নং ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে কর্মবিরতির সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ এর নেতৃত্বে ছিলেন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার এ সময় বলেন, সারা দেশের নৌযান শ্রমিকরা সকল ক্ষেত্রে অবহেলিত হচ্ছে। নানা ধরনের হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। তাদের খাদ্যভাতা দেওয়া হচ্ছে না। তাদের ১৫ দফা দাবি মানা হচ্ছে না। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষে আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সোমবার দীর্ঘসময় ধরে বিআইডব্লিউটি এর প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও এতে কোন প্রকার সুরহা হয়নি। যে কারণে আমাদের কর্মবিরতি চলছে ও চলবে।

তিনি আরো বলেন নৌযান শ্রমিকদের ১৫ দফা দাবিগুলোর অন্যতম হলো, নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের খাদ্য ভাতা নির্ধারণ করে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে কার্যকর করতে হবে। নৌ আইন মেনে ডবিøউটিসি সিরিয়াল অনুযায়ী সকল চট্টগ্রাম সমুদ্রগামী সকল লাইটারেজ জাহাজ চলাচল করতে হবে। মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, সার্ভিসবুক দিতে হবে এবং কথায় কথায় কোন শ্রমিকের চাকুরীচ্যুত করা চলবে না। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়লে তার দায় মাস্টারদেরকে দেওয়া যাবেনা। জাহাজে সকল শ্রমিকদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। নৌযানে কাগজপত্র দেখার নামে নৌ প্রশাসনের সকল হয়রানী জুলুম, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ইনল্যান্ড মাস্টার ড্রাইভারশীপ পরীক্ষায় ও ডিপিডিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সকল প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং কোর্স চলাকালীন সময়ে নৌযান থেকে শ্রমিকদের ছুটি বাধ্যতামূলক দিতে হবে। নৌযান শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য দাতব্য চিকিৎসালয় ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে হবে। কর্মস্থলে দূর্ঘটনায় নৌযান শ্রমিক কর্মচারীদে ১২ লাখ টাকা মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকার কর্তৃক কল্যাণ তহবিল অর্থ প্রাপ্তির বিষয়টি সহজপন্থ ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতগামী নৌযান শ্রমিকদের লোকাল এজেন্টের মাধ্যমে ল্যান্ডিং পাশ, সার্ভিস ভিসা ও জাহাজে ফ্রিজিং ব্যবস্থা না থাকায় শ্রমিকদের সুবিধামতো স্থানে দৈনন্দিন বাজারঘাট করার জন্য পারাপারের নৌকার ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন পয়েন্টে নদীপথে ডাকাতি, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী বন্ধ করতে হবে। নৌপথে ড্রেজিং ও পর্যাপ্ত বয়াবাতি স্থাপন করতে হবে। ৮ ঘন্টার অধিক কাজের জন্য ওভারটাইম হিসেব করে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হবে। ঈদের পূর্বে শ্রমিক দিবসে (১ মে) নৌযান শ্রমিকদের ছুটি দিতে হবে।

বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি শাহআলমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্তার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মোঃ নিজাম খান, শারুলিয়া শাখার সভাপতি মোঃ শামীম আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ পান্না মিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মোঃ কবীর হোসেন, ডেমরা শাখার সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন, কাওটাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ নিজাম উদ্দিন সহ প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুন :