নুর-মামুনদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এবার অনশনে ঢাবির সেই শিক্ষার্থী

প্রকাশিত : ৯ অক্টোবর ২০২০

ধর্ষণ মামলায় কোটা আন্দোলনের নেতা হাসান আল মামুন ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছয়জনকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে আটটা থেকে এই অনশন শুরু করেন তিনি। এ সময় একাত্মতা জানিয়ে তার সাথে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের অন্তত ২২ জন নেত্রী। মামলা দায়েরের ১৭ দিন পার হলেও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় অনশনে বসেছেন মামলার বাদী। বৃহস্পতিবার রাতে আটটার দিকে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন তিনি। পরে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের ২২ নেত্রীও তার সাথে একাত্মতা জানিয়ে সেখানে অবস্থান নেন। তাদের মধ্যে আছেন, ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি, উপসাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি ফারজানা নিপা, কুয়েত-মৈত্রী হল ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদা পারভীন, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক জেরিন তাসনীম পূর্ণিসহ অন্যরা।

কর্মসূচির বিষয়ে মামলাকারী সেই শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমানে ধর্ষণ একটা মহামারী আকার ধারণ করেছে। আমিও এর ভুক্তভোগী। এর আগে লালবাগ, কোতোয়ালী থানায় মামলা করেছি। কিন্তু মামলার এখন পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমার এই আমরণ অনশন কর্মসূচি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তারের জন্য আজকে আমার এই আমরণ অনশন কর্মসূচি। অনশনে একাত্মতা জানিয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী তিলোত্তমা শিকদার বলেন, ভুক্তভোগী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। সে অনশন করছে। তাই তাকে সাহস যোগানোর জন্য, তার দাবির সাথে একাত্মতা জানিয়ে আমরা তার পাশে এসে বসেছি। দাবি আদায় হওয়া পর্যন্ত আমরা তার পাশে থাকবো।

এর আগে বুধবার (৭ অক্টোবর) মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার চেয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালতে আবেদন করেন অভিযোগকারী ঢাবির সেই ছাত্রী। আদালত আবেদনটি নথিভুক্ত করেছেন।
তার আগে গত ৪ অক্টোবর ভিপি নুরসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তারের জন‌্য আবেদন করেন মামলার বাদী। আদালত সেদিনও আবেদনটি নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। বুধবার ওই ছাত্রী বলেন, লালবাগ ও কোতয়ালী থানায় ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর দুটি মামলা দায়ের করি। স্বাভাবিকভাবে এ ধরনের মামলা দায়েরের পরপরই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। দুই মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা একই। দুই থানাই আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না। এ বিষয়ে একাধিকবার থানায় যোগাযোগ করেছি। পুলিশ শুধু বলছে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও প্রতিবেদন দাখিলের আবেদন করেছি। ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে আমি সন্দিহান। যেহেতু কেউ মারা না গেলে টনক নড়ে না। তাই জীবন দিয়ে হলেও আমি ন্যায়বিচার পাওয়ার সেই পথে হাঁটবো। এদিকে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) লালবাগ থানায় হওয়া ধর্ষণ মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় আদালত ২৭ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন। প্রসঙ্গত, গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে (২৮) প্রধান আসামি করে ছয় জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ (২৮), বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি নাজমুল হুদা (২৫) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহিল বাকি (২৩)। পর ২১ সেপ্টেম্বর বাদী কোতোয়ালি থানায় একই অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

আপনার মতামত লিখুন :