পুলিশী বাধা সত্তে¡ও শহরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের রাজপথ অবরোধ

প্রকাশিত : ২ জুলাই ২০২০

করোনা পরীক্ষার ফি নেয়া বন্ধ করা, বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেয়া, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি-লুটপাট-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলসমূহ চালু ও আধুিনকায়নের দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে আজ বেলা ১১ টা থেকে ১২ টা নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। অবরোধ চলাকালে কয়েকদফা পুলিশ বাঁধা প্রদান করলেও বামজোট ১ ঘণ্টার অবরোধ কার্যক্রম অব্যহত রাখে।

রাজপথ অবরোধ কর্মসূচির প্রারম্ভে প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলার নির্বাহী ফোরামের সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লব, কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ শহর শাখার সভাপতি আব্দুল হাই শরীফ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বিমল কান্তি দাস, সেলিম মাহমুদ, রাশিদা আক্তার, পপি রানী সরকার। অবরোধে পুলিশী বাঁধা উপেক্ষা করে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ব্যাপক পরীক্ষা করা এবং সনাক্তদের আলাদা করা। তা নিশ্চিতের জন্য দরকার পরীক্ষাকেন্দ্র বাড়ানো এবং বিনা পয়সায় পরীক্ষা করা।

আমাদের আশেপাশের সমস্ত দেশে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা হলেও বাংলাদেশে করোনা পরীক্ষা ফি পরীক্ষাকেন্দ্রে ২০০ টাকা এবং বাসায় ৫০০ টাকা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দরিদ্র মানুষের দেশে ফি নিয়ে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে সরকার করোনা নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দায়িত্ব নিচ্ছে না। দেশে ব্যাপকভাবে করোনা সংক্রমন ও মৃত্যু বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তা নিয়ন্ত্রণে সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ১ জুলাই থেকে দেশের ২৫ টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লোকসানের বিভ্রান্তিকর যুক্তি হাজির করে সরকার গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে শ্রমিক চাকুরিচ্যূত করে পিপিপি মাধ্যমে বেসরকারি মালিকানায় পাটকলগুলো ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার পাটকল লোকসানের কারণ যথাযথভাবে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা না নিয়ে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবে ব্যাক্তিমালিকদের লুটপাটের সুযোগ করে দিচ্ছে। শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ বলেছিল মাত্র ১২০০ কোটি টাকা খরচ করে আধুনিকায়ন করলে পাটকলগুলোতে তিনগুন লাভ নিয়ে আসা সম্ভব। কিন্তু সরকার সে পথে না যেয়ে ৬০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পাটকলগুলো ব্যাক্তি মালিকানায় তুলে দেয়ার জন্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন পাটকলগুলোর মাথাভারি প্রশাসন, আধুনিকায়ন না করা এবং সিজন শেষে বেশি মূল্যে কাঁচাপাট ক্রয় ইত্যাদি হল পাটকল লোকসানের কারণ। শ্রমিকরা কোনভাবেই তার জন্য দায়ি নয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বামজোটের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে পুলিশী বাঁধা ও নেতৃবৃন্দকে হেনস্থা করা সরকারের স্বৈরাচারী শাসনের বহিপ্রকাশ। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে করোনা ফি নেয়া বন্ধ, বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য দায়ীদের শাস্তি প্রদান এবং অবিলম্বে বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু ও আধুনিকায়নের দাবি জানান।

 

আপনার মতামত লিখুন :