লকডাউন নিয়ে বিভ্রান্তি, সিদ্ধান্তে কালক্ষেপণ

প্রকাশিত : ২০ জুন ২০২০

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বাংলাদেশের রেড জোনগুলোতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকায় পূর্ব রাজাবাজার এবং ঢাকার বাইরে তিনটি এলাকা লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে৷ বাকিগুলো কবে হবে, কীভাবে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়৷ সিদ্ধান্তে কালক্ষেপনের মাঝেই প্রাণঘাতি ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। খবর ডয়চে ভেলের।

এ বিষয়ে গঠিত সরকারের টেকনিক্যাল কমিটির সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রামের যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ জনসংখ্যায় সর্বশেষ ১৪ দিনে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছে সে সব এলাকা রেড জোন৷ আর ঢাকার বাইরে প্রতি লাখে ১০ জন৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনসংখ্যার হিসাব করেছে ২০১১ সালের সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী৷ কিন্তু এখন জনসংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে৷ ফলে জনসংখ্যার অনুপাত নিয়ে জটিলতা হচ্ছে৷ স্থানীয় পর্যায়ে তাই লকডাউন ঘোষণা কঠিন হচ্ছে৷।

কে লকডাউন ঘোষণা করছে?

ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্রায় তিন লাখ মানুষের বসবাস৷ ওই এলাকায় বুধবার রাতে হঠাৎ করেই লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হয় মাইকে৷ আর এই ঘোষণায় পুরো এলাকার মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন৷ তারা নানা জায়গায় ফোন করে জানতে চান বিষয়টি৷ কারণ এটা নিয়ে আগাম কোনো প্রচার ছিল না৷ পরে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ঢালি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং জানান লকডাউনের ঘোষণা ভুল ছিলো৷ এরকম কেন হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আসলে করোনা প্রতিরোধে আমরা আগের চেয়ে একটু বেশি বড়াকড়ি আরোপ করেছি বসুন্ধরা এলাকায়৷ আর তাতেই কিছু যুবক উৎসাহী হয়ে লকডাউনের কথা মাইকে প্রচার করেন৷’’

লকডাউন পূর্ব রাজাবাজার

লকডাউন ১৪ দিন, না ২১ দিন তা নিয়েও বিভ্রান্তি আছে পূর্ব রাজাবাজারে৷ সেখানে লকডাউন শুরু হয় ৯ জুন থেকে৷ ১৪ দিনের হলে তা আগামী সোমবার শেষ হওয়ার কথা৷ কিন্তু বাসিন্দারা জানেন না ঠিক সোমবারে লকডাউন শেষ হবে কিনা৷ তারা শুনেছেন এটা ২১ দিন হতে পারে৷ তাহলে শেষ হবে ৩০ জুন৷ ওই এলাকার বাসিন্দা গাড়িচালক মাসুদ আহমেদ এই লকডাউনে দুই ধরনের সমস্যায় পড়েছেন৷ তিনি একটি বাসার প্রাইভেট কার চালান৷ সেই বাসা আবার লকডাউনের বাইরে৷ তিনি সেখানে যেতে পারেন না৷ তিনি জানে না এখন তিনি বেতন পাবেন কিনা৷ আবার লকডাউন এলাকায় ভ্যানে করে শাকসবজি বিক্রি করা হলেও তার দাম চড়া বলে জানান তিনি৷ ওই এলাকায় অনেকেই আছেন যারা অন্য এলাকায় চাকরি করেন৷ সেখানে অফিস খোলা৷ এখন তাদের অফিস বেতন দেবে কিনা তা নিয়েও আছে অনিশ্চয়তা৷ সরকার লকডাউন এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও এব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা দেয়নি৷

আপনার মতামত লিখুন :