করোনা আতঙ্কে বিপর্যস্ত তখনও ঈদের দিনে ত্রাণ নিয়ে জনগণের বাড়িতে মানবতার ফেরিওয়ালা গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান টিটু

প্রকাশিত : ২৭ মে ২০২০

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা ও বন্ধু..’। উপমহাদেশের কিংবদন্তী গায়ক ভূপেন হাজারিকার এ কালজয়ী গানটি মনে পরে গেল যখন দেখলাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দেশব্যাপী কর্মহীন ঘরবন্দী শ্রমজীবি মানুষ, দরিদ্র ও দু:স্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য করছেন ৪নং গৈলা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল হোসেন টিটু তালুকদার। ঠিক তখনই মনে হচ্ছিল মানুষের প্রতি হৃদয়টাকে স্ফিত করে মানবিকতাকে জাগিয়ে তুলতেই যেন গানটি গেয়েছিলেন উপমহাদেশের কিংবদন্তী গায়ক ভূপেন হাজারিকা।

বিভিন্ন সময়ে বাঙালী জাতি নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে অভ্যস্ত হলেও এমন দুর্যোগ আর আগে কখনো আসেনি। করোনা ভাইরাসের মহামারী ঠেকাতে সরকারের নির্দেশে মানুষকে ঘরে থাকতে হচ্ছে বাধ্যতাম‚লকভাবে। বিপাকে পরেছেন নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা। মহামারীতে রূপ নেওয়া প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি এ যেন মানবতার পক্ষেরও লড়াই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ৪নং গৈলা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল হোসেন টিটু তালুকদার করোনা ভাইরাসের মহামারী ঠেকাতে সরকারের নির্দেশে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ত্রাণ বিতরণ করেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় ঈদের দিনেও গৈলা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড প‚র্ব সুজনকাঠি গ্রামের টিটু সরদার করোনার কারণে দীর্ঘদিন প্রবাসে বন্দী রয়েছেন। যার প্রভাবে গ্রামে তার পরিবার আর্থিকভাবে অভাব-অনটনে দিনযাপন করছিলো।

আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত এমন খবর পাওয়ার পর গৈলা মডেল ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও জননেতা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ এমপি’র পক্ষ থেকে পরিবারটি কে ঈদ উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেন গৈলা মডেল ইউপি চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে অবস্থিত কাঁচাবাজার, ঔষধের দোকান ও নিত্যপণ্যের দোকানগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষে দোকানগুলোর সামনে নির্দিষ্ট দূরত্বে রং দিয়ে গোল চিহ্ন দিয়ে দেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার নিতে আসা কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল ক্রেতাদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন। প্রাণঘাতি করোনা রোধে সকলকে সামাজিক নিরাপত্তা দুরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা সকলের জন্য পরিষদ চত্ত¡রে হাত ধোয়ার ব্যাবস্থা করেন তিনি। এলাকার বাহির থেকে কেউ এলে তাকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। ওই সময় অভাবগ্রস্থদের সংসারের খরচও বহন করেছেন তিনি নিজ অর্থায়নে। করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সামাজিক দুরত্ব, পরিচ্ছন্নতা ও হাত ধোয়াকে যখন সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তখনই একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ শুরু থেকে অদ্যাবধি নিরলসভাবে কাজ করে ভূয়সি প্রশংসা পেয়েছেন তিনি সর্বমহলে।

এ ব্যাপারে ৪নং গৈলা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল হোসেন টিটু তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যমান সময়ের মহাক্রান্তিকালে বিশ্ব অতিক্রম করছে ভয়ানক এক সঙ্কটাপন্ন স্তব্ধ জমাটবাঁধা অদ্ভুত এক আঁধারের গলিপথে। সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত মানবজাতি স্মরণকালের যেকোন সময়ের মহামারীর তুলনায় অনেক বেশি আতঙ্কিত। আমাদের দেশ এর ব্যতিক্রম নয়। করোনা ভাইরাসের মহামারী ঠেকাতে সরকারের নির্দেশে মানুষকে ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও দক্ষিণ বাংলার উন্নয়নের রূপকার জননেতা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্’র নির্দেশনায়।

 

আপনার মতামত লিখুন :