ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পানের’ প্রভাবে প্লাবিত হয়েছে নিম্নঞ্চল।। কুয়াকাটার বন্যনিয়ন্ত্রন বাঁধ হুমকির মুখে

প্রকাশিত : ২০ মে ২০২০

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি,২০ মে।। ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পানের’ প্রভাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিম্নঞ্চল সমূহ প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে রাবনাবাদ ও আন্ধারমানিক নদীর পানি চার-পাঁচ ফুট বৃদ্ধি। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সৈকত সংলগ্ন বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। পানির চাপ বাড়লে এ বাঁধের খাজুরা-মাঝিবাড়ি পয়েন্ট ছুটে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়া মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধ, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নিচকাটা জলকপাট আন্ধারমানিক নদীর পানির চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুয়াকাটার আশার আলো জেলে সমবায় সমিতির সভাপতি নিজাম উদ্দিন শেখ বলেন, বঙ্গোপসাগা প্রচন্ড উত্তাল রয়েছে। সাগর থেকে উঠে আসা ৪-৫ ফুট উচু ঢেউ আছড়ে পড়ছে কিনারায়।এদিকে কলাপাড়া পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকাসহ উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের গঙ্গামতি, চাকামইয়া ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া, বালিয়াতলী খেয়াঘাটের বাহির পাশের মানুষজনের কাঁচা ঘর-বাড়ি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।
বুধবার সকাল থেকে মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে শুরু করেন। তবে কলাপাড়া পৌর শহরের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই কিছু মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় মানুষজনের ভোগান্তি হয়েছে। শহরের মঙ্গলসুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ জনের মতো নারী, পুরুষ ও শিশু আশ্রয় নিয়েছে। এদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হলেও রান্না করা কোনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি। এদিকে বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড সিপিসি টিম লীডার মো. শাহ আলম মীর (৫৪) প্রচার কাজের সময় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, ঘূর্নিঝড় আম্পানের প্রভাবে পায়রা সমুদ্র বন্দর এলাকায় দশ নম্বর মহাবিপদ সংকতে জারি করা হয়েছে। ৫ থেকে ১০ ফুট জলোচ্ছাস নিয়ে বিকাল কিংবা সন্ধা নাগাদ ঘূর্নিঝড়টি পটুয়াখালীর উপক‚লীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে।ঘূর্নিঝড় আম্ফানের প্রভাবে ৫/৭ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাসে বুধবার সকালে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ১৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ৮ হাজার মানুষ পানি বন্ধী হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস।

কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) তপন কুমার ঘোষ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে এ উপজেলায় ৭৬ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য, নগদ ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তা দিয়ে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার দুর্গত মানুষকে যথাসম্ভব সেবা দেয়া হচ্ছে।’ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর নানাবিধ সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, গত ১৮ মে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় আশ্রয়কেন্দ্রে আলোর ব্যবস্থা, শুকনো ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও দুটি পৌরসভার মেয়রদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :